মোংলা বন্দরকে চট্রগ্রামের বিকল্প বন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হবে -পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান
- আপডেট সময় : ০৭:৪৭:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩ ৮২ বার পড়া হয়েছে
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, মোংলা সমুদ্র বন্দরের গুরুত্ব আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে, তাই চট্রগ্রাম বন্দরের বিকল্প বন্দর হিসেবে মোংলা বন্দরকে গড়ে তোলা হচ্ছে।
তবে বন্দর সচল রাখতে হলে চ্যানেলের গভীরতা থাকাটা বিশেষ প্রয়োজন, কিন্ত বন্দরের পশুর চ্যানেল পলি পরে ভরাট হচ্ছে, এটা কাগজে-কলমে দেখতে পাই, তাই সরেজমিনে পরির্দশনে এসে নিজের চোখে দেখে গেলাম। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বন্দরের পশুর চ্যানেলের ইনার বার ড্রেজিং প্রকল্প পরির্দশনে এসে একথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, মোংলা বন্দর একটি সম্ভাবনাময় বন্দর, তাই দেশের সার্থে এ বন্দররের আরো বেশী উন্নয়ন করা প্রয়োজন। চ্যানেলের ইনার বার ড্রেজিংয়ের মাটি ফেরা নিয়ে একটু সমস্যা ছিল, এটাও দেখা হচ্ছে। মোংলা বন্দরকে যদি পরিবেশ বান্ধব এবং আধুনিক বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে হয়, তবে এর সাথে সংশ্লিষ্টদের বা এর আশপাশের মানুষদের একটু ত্যাগ স্বিকার করতে হবে। কারণ বন্দর যদি না থাকে তবে এর আশপাশ এলাকার কোন মুল্য থাকবে না। বন্দর আছে বলেই এ এলাকার মুল্য দেশের সব স্থানের চেয়ে অনেক বেশী। এ জন্য এ বন্দরকে আধুনিক বন্দরের রুপান্তর করা সহ সকল উন্নয়ন করতে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
একটি সমুদ্র বন্দরের প্রান হলো চ্যানেল পরিস্কার ও গভীরতা বজায় রাখা। চ্যানেল যদি গভীরতা কম থাকে তা হলে অধিক গভীরতা জাহাজ বিদেশ থেকে সরাসরি বন্দরে ঢুকতে পারবেনা। এখানে অন্যান্য উন্নয়নমুলক প্রকল্পের পাশাপাশি চ্যানেল ড্রেজিং চলমান রাখা একান্ত প্রয়োজন।
মোংলা বন্দরকে উজ্জীবিত করতে বঙ্গোপসাগরের মোহনা থেকে বন্দর জেটি পর্যন্ত প্রায় ১শ ৩২ কিলোমিটার চ্যানেল খননের জন্য দুটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এর মধ্যে আউটারবার ড্রেজিং খননের কাজ শেষ করে ২০২১ সালের ১৩ মার্চ শুরু হয় ১৯ কিলোমিটার ইনারবার ড্রেজিং প্রকল্প খননের কাজ। শুরু হওয়া এ প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ড্রেজিংয়ের কাজ সম্পুর্ন হয় মাত্র ২৫ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও বালু ফেলার জায়গা না থাকায় আবারও স্থবির হয়ে যায় ইনারবার প্রকল্পের কাজ। তাই এবারে প্রকল্পে ব্যায় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ৩০ জুন কাজটি সম্পন্ন করা হবে। বন্দরের তথ্যমতে, প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৭৯৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আরো ১৯৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বাড়িয়ে এখন ৯৯২ কোটি ২৬ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় পরিকল্পনা মন্ত্রী প্রথমে বন্দর কর্তৃপক্ষের রেষ্ট হাউজ “পারিজাত” এসে পৌঁছায়। সেখানে তিনি রাত্রিযাপন করেন। সেখানে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার সাথে সাক্ষাত করেণ। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বার সহ বন্দরের চলমান বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করবেন তিনি। সকাল সাড়ে ১১টায় তিনি সুন্দরবনের একমাত্র সরকারী বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্র বনের করমজল ঘুরে দেখেন মন্ত্রী। এসময় সুন্দরবনের সৌন্দার্য উপভোগ করেন।
এছাড়া ঘুড়ে দেখেন সুন্দরী, বাইন, পশুর সহ বিভিন্ন গাছপালা। বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্রে রক্ষিত মায়াবী চিত্র হরিণ, বানর, কুমির সহ হরেক রকমের বন্যপ্রানীর ও গহীন বনের নানা জাতের পাখির কিচির-মিচির ডাক শুনে মুগ্ধ হয় পরিকল্পনা মন্ত্রী সহ তার পরিবারের সদস্যরা।
এসময় তার সাথে মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব, বন্দরেরর ইনারবার ড্রেজিং প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শওকাত হোসেন, প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মেহেদী এবং মন্ত্রীর ব্যাক্তিগত ও বন্দরের কর্মকর্তারা ছাড়াও তার পরিবারের সদস্যরা সফর সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।