শালিখায় বাড়ছে গরু চোরের দৌরাত্ম্য!
- আপডেট সময় : ০১:৪১:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৬ বার পড়া হয়েছে
অনেকেই কইছিল গরুডা বেছে ফ্যাল কিন্তু আমি গরুডা বেছলাম না শুধু মায়া লাগবেনে বলে। বারবার করে মনিগের বাবা কইছিল প্রদীপ-বিদ্যূতের গরু চুরি হয়ে গেছে তোমার গরুডা বেঁচে ফেলো। কিন্তু আমি গরু বেচলাম না কেন ? এই বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মাগুরার শালিখা উপজেলার তালখড়ি ইউনিয়নের সোনাডাঙ্গা গ্রামের সুন্দরী। নয় মাসের গাভীন গরু চুরি হয়ে যাওয়াই অনেকটা হতভম্ব হয়ে পড়েছেন তিনি।
গরু চুরি হওয়ার পরে খোঁজখবর নিয়েছেন কিনা বা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সুন্দরীর স্বামী অনিল পরামানিক বলেন, খুঁজে আর কি লাভ, আর তাছাড়া আমার খোঁজার তো লোক নেই আমরা বুড়া বুড়ি দুইজন মিলে বাড়িতে থাকি মেয়েগুলো সব বিয়ে হয়ে গেছে আমার খোঁজার মানুষ নেই। ভগবান যা ভাল মনে করেছেন তাই করেছেন এই বলে তিনিও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে শুধু অনিল প্রামানিকই নয়। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে গোয়াল ঘরের তালা ভেঙ্গে শালিখা উপজেলার তালখড়ি ইউনিয়নের গ্যাড়ামাড়া গ্রামের বিদ্যুৎ এর ১টি গাভীন গরু, প্রদীপের ১টি এবং আড়পাড়া ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের উত্তম সরকারের ১টি, রাজকুমারের ১টি হালের গরু, হানিফের ১টি গরুসহ মোট ছয়টি গরু হাতিয়ে নিয়েছে চোরচক্র।
এছাড়াও গত নভেম্বর মাসের ১৭ তারিখে শতখালী ইউনিয়নের মকবুল হোসেনের ১টি এবং ১৬ অক্টোবর তারিখে আড়পাড়া ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের জসীম উদ্দিনের ৩টি গরু চুরি হয়েছে। গাভীন গরু ও হালের গরু চুরি হয়ে যাওয়াই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন গরুর মালিকরা।
শালিখা উপজেলার তালখড়ি ইউনিয়নের গ্যাড়ামারা গ্রামের প্রদীপের স্ত্রী অন্তরিকা বিশ্বাস বলেন, ভাবছিলাম গরুডা বিক্রি করে বিভিন্ন দেনা পরিশোধ করব কিন্তু সেইডা আর সম্ভব হলো না। ১লা ডিসেম্বর গরু চোরেরা আমাদের দুইডা গরু চুরি করে নিয়ে গেছে এই বলে একই সঙ্গে শিশুদের মতো কাঁদতে শুরু করেন প্রদীপ ও তার স্ত্রী অন্তরিকা বিশ্বাস।
উপজেলা সদর আড়পাড়া ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের চন্দন সরকার বলেন, চলতি মাসের ১১ তারিখে আমাদের একটি ও আমার কাকার একটি গরু চুরি হয়েছে যার মূল্য ২ লক্ষাধিক টাকার উপরে।
একই গ্রামের জসীম উদ্দিন বলেন, গত মাসের ১৬ তারিখে আমার ৩টা গরু চুরি হয়ে গেছে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেছি কিন্তু আজও পাইনি। এব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেছি।
এব্যাপারে শালিখা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওলি মিয়া মুঠোফোনে বলেন, সম্প্রতি গরু চুরির কয়েকটি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি এবং এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে পাশাপাশি গরু চুরি প্রতিরোধে আমরা পুলিশি টহল আরো জোরদার করেছি এবং বিট পুলিশিং অফিসারদের মাধ্যমে এলাকায় এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা করছি।