স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে ঠেকাতে শশুরবাড়িতে চার দিন ধরে অনশনে স্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৫:০২:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ জানুয়ারী ২০২২ ২০১ বার পড়া হয়েছে
পারিবারিক ঝগড়ার জের ধরে স্ত্রীকে এক তরফা তালাক দেয় এক স্বামী। প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ের আয়োজনও করে স্বামী রহম আলী দেওয়ান (৫০)।
এদিকে স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে ঠেকাতে তিন সন্তানের জননী গৃহবধু গত চার দির ধরে স্বামীর বাড়ীতে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগীর নারীর অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কোলহের জের ধরে গত ২০ এপ্রিল ২০২১ তারিখে গোপনে এক তরফা ভাবে স্ত্রীকে তালাক দেন রহম আলী দেওয়ান। তালাকের কপি ওই গৃহবধূর হাতে পৌঁছালে তালাকের বিষয়টি জানাজানি হয় । পরে আইনগতভাবে তালাকটি সম্পন্ন না হওয়ায় গত ৬ মে ২০২১ ইং তারিখে পুনরায় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে তালাক নোটিশ পাঠায় স্বামী রহম আলী। কিন্তু তালাক নোটিশটি গ্রহণ না করে ওই গৃহবধূ এলাকার লোকজনকে বিষয়টি মিমাংসার জন্য অবহিত করে। কিন্তু বিভিন্নভাবে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করলেও একটি মহলের কারণে তা সম্ভব হয়নি। ফলে উভয় পক্ষই পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে।
এরই মধ্যে এলাকার কয়েকজন সমাজপতির প্ররোচনায় গত ১৭ জানুয়ারি (সোমবার) মধ্য রাতে একই গ্রামের পার্শ্ববর্তী পাড়ার আব্দুর রহিমের মেয়ের সাথে রহম আলীর দ্বিতীয় বিয়ের আয়োজন করলে সেখানে হাজির হন প্রথম স্ত্রী ওই গৃহবধূ। পরে বিয়ে পন্ড হলে ওই দিন রাতেই রহম আলীর বাড়ি অনশনে বসেন ওই গৃহবধূ। খবর পেয়ে গত ২০ জানুয়ারি (বুধবার) রাতে হরিরামপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, “আমি আমার স্বামীর সংসার করতে চাই। আর্থিক বিষয় দেখিয়ে এক তরফা ভাবে আমাকে তালাক দিয়েছেন। এলাকার কয়েকজন মাতবর বিষয়টি সমাধানে গরিমশি করছেন। মূলত তাদের কারণেই আমাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হয়। এখন তারা দ্বিতীয় বিয়ে করানোর জন্য আমার স্বামীর পেছনে লেগেছে। বিয়ের খবর পেয়েই আমি ওই বাড়িতে যাই। সেখানে সমাজের প্রভাবশালী আব্দুর রব, ইয়াকুব আলী, হাসমত আলীসহ আরও অনেকেই ছিল। তারাই আমার স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করানোর জন্য নিয়ে গেছে। আমি যাওয়ার পরে বিয়ে বন্ধ করে আমার স্বামীকে ফেলে তারা সবাই পালিয়ে যায়। পরে আমি আমার স্বামীর বাড়ি এসে বসি।”
ভুক্তভোগী নারী শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের মুন্নাফ সরদারের মেয়ে। সংসার জীবনে রহম আলী দেওয়ান তিন কন্যা সন্তানের জনক । বড় দুই মেয়ের বিয়ে হলেও ছোট মেয়ে বর্তমান স্থানীয় ভাদিয়াখোলা ফিরোজা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী।
প্রতিবেশি ফরমান আলী জানান, “টাকা পয়সা নিয়ে ওই গৃহবধূ ও স্বামীর সাথে মনোমালিণ্য চলছে। রহম আলী দীর্ঘদিন বিদেশে ছিল। তার স্ত্রী নাকি স্বামীর টাকা নষ্ট করেছে। তবে মেয়েদের চলাফেরা ভাল ছিল না। মেয়েদের কারণেই তার এই দুরাবস্থা।”
এব্যপারে স্বামী রহম আলী দেওয়ানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর ইসলাম জানান, “অনশনের ঘটনার খবর পেয়ে তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুতই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।