সংবাদ শিরোনাম ::
শিক্ষার্থীদের মামলায় রাজবাড়ীতে ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা গ্রেফতার পিরোজপুরে স্ত্রী-কন্যা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ২১ বছর পর গ্রেফতার স্বামী পরিত্যক্তা নারী সালমা হত্যার বিচার দাবিতে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ রাজবাড়ীতে ভোক্তা অধিকার আইনে দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা দৌলতদিয়া পোড়াভিটায় পুলিশের অভিযানে হেরোইনসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার রাজবাড়ীতে হেরোইনসহ নারী মাদক কারবারি গ্রেফতার জলবায়ু অর্থায়ন হতে হবে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চরফ্যাশন সরকারি কলেজের নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে মোহাম্মদ উল্যাহ স্বপনের নিয়োগ নোয়াখালীতে খাল দখল নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে নিহত গোয়ালন্দের শফিক সহ বিএনপিপন্থী ৬৬ আইনজীবীকে মামলা থেকে অব্যাহতি
সংবাদ শিরোনাম ::
শিক্ষার্থীদের মামলায় রাজবাড়ীতে ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা গ্রেফতার পিরোজপুরে স্ত্রী-কন্যা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ২১ বছর পর গ্রেফতার স্বামী পরিত্যক্তা নারী সালমা হত্যার বিচার দাবিতে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ রাজবাড়ীতে ভোক্তা অধিকার আইনে দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা দৌলতদিয়া পোড়াভিটায় পুলিশের অভিযানে হেরোইনসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার রাজবাড়ীতে হেরোইনসহ নারী মাদক কারবারি গ্রেফতার জলবায়ু অর্থায়ন হতে হবে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চরফ্যাশন সরকারি কলেজের নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে মোহাম্মদ উল্যাহ স্বপনের নিয়োগ নোয়াখালীতে খাল দখল নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে নিহত গোয়ালন্দের শফিক সহ বিএনপিপন্থী ৬৬ আইনজীবীকে মামলা থেকে অব্যাহতি

সালথায় নিজের ফেসবুক আইডিতে ‘সরি’  লিখে যুবকের আত্মহত্যা

শরিফুল হাসান, সালথা (ফরিদপুর)
  • আপডেট সময় : ১১:০৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩ ১২০ বার পড়া হয়েছে

সালথায় নিজের ফেসবুক আইডিতে 'সরি'  লিখে যুবকের আত্মহত্যা।

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
ফরিদপুরের সালথায় অন্তর হুসাইন জারিফ (২৫) নামে এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘সরি’ লিখে স্ট্যাটাস দেওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ভোরে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ভাওয়াল মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জারিফ ওই গ্রামের ব্যবসায়ী মো. হুমাউন কবিরের একমাত্র ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, অন্তর হুসাইন জারিফ একা এক ঘরে ঘুমাতো। আর তার মা-বাবা আলাদা আরেকটি ঘরে থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে জারিফ একা তার ঘরে  ঘুমিয়ে ছিল। গভীর রাতে তিনি তার ফেসবুকে ‘সরি?’ লিখে পোস্ট দিয়ে পরিবারের সবার অজান্তে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলে পড়ে। বিষয়টি পরিবারের লোকজন টের পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে ঝুলন্ত জারিফকে আড়া থেকে নিচে নামান। ততক্ষণে তিনি মারা যান।
নিহতের চাচাতো ভাই আবুল হাসান জানান, অন্তর হুসাইন জারিফ দুটি বিয়ে করেন। পারিবারিক কলহের জেরে প্রথম স্ত্রী ডিভোর্স দেন। পরে আবারও ফরিদপুর শহরে গোপনে আরেকটি বিয়ে করেন। ওই স্ত্রীও দুই মাস আগে ডিভোর্স দিয়ে চলে যায়। এরপর তিনি হাতাশায় ভুগছিল। ২০২২ সালে ৩০ ডিসেম্বর রাত ১টার দিকে আত্মহত্যার পক্ষে নিজের ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তখন আমরা ওকে অনেক বুঝিয়ে আত্মহত্যার পথ থেকে ফিরিয়ে আনি।
অন্তর হুসাইন জারিফ ওই স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন- আত্মহত্যা করা মহাপাপ নাকি, না সে বিষয়ে কিছু বলব না। সেটা যার যার বিশ্বাস। আমি প্রায় দেখছি কেউ আত্মহত্যা করলে অসংখ্য মানুষ তাকে গালি গালাজ করে, স্বার্থপর ডাকে, আগুনে পুড়বে, জাহান্নামে যাবে, কারো কথা চিন্তা করল না, কত খারাপ, ইস্টুপিট বলে। আমি বিশ্বাস করি আত্মহত্যা খারাপ। কিন্তু যেভাবে মানুষ কথা বলে তা আমাকে অত্যন্ত অবাক করে। আপনি কখনো আত্মহত্যা না করলে বুঝবেন না, মানুষ কোন পর্যায় গিয়ে আত্মহত্যা করে।
মানুষ কখন আত্মহত্যা করে জানেন? যখন নিজেকে অসহায় লাগে, মনে হয় কাউকে বলে শান্তি বা সমাধান কিছুই পাওয়া যাবে না। প্যানিক, অ্যাটাক, ডিপ্রেশন, স্টেজ একসাথে এসে আপনার মাথা খালি করে দেয়। শরীর অনবরত কাঁপতে থাকে, চোখে সব ঝাপসা লাগতে থাকে, মাথা প্রচুন্ড ভারি হয়ে থাকে, একসাথে লাখ লাখ কোটি কোটি জিনিস মাথায় এসে আবার একসাথে চলে যায়। প্রতি সেকেন্ড এমন হতে থাকে। ওই সময় কোনটা ঠিক কোনটা ঠিক না, এটা বোঝার ক্ষমতা থাকে না। এটা বোঝার ক্ষমতা থাকলে কেউ শখের বশে নিজেকে শেষ করতো না।
আপনি যাকে স্বার্থপর বলে গালি দিচ্ছেন, সে নিজেও জানে সে স্বার্থপর, কোনো কাজের না। নিজেকে এতো আহাম্মক আর অকেজো মনে করে বলেই হয়তো জীবন দিয়ে দেয়। আমি কিভাবে এতোকিছু জানি সে কথা বলবো না। কিন্তু এতটুকু বলতে পারবো আমার কথা ভুল হবে না। সুতরাং আত্মহত্যা খারাপ হতে পারে, আত্মহত্যা করা মানুষগুলো খারাপ না।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক বলেন, দুই মাস আগে স্ত্রী ডিভোর্স দিয়ে চলে যাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত ছিল জারিফ। এই কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানতে পেরেছি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

সালথায় নিজের ফেসবুক আইডিতে ‘সরি’  লিখে যুবকের আত্মহত্যা

আপডেট সময় : ১১:০৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩
ফরিদপুরের সালথায় অন্তর হুসাইন জারিফ (২৫) নামে এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘সরি’ লিখে স্ট্যাটাস দেওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ভোরে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ভাওয়াল মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জারিফ ওই গ্রামের ব্যবসায়ী মো. হুমাউন কবিরের একমাত্র ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, অন্তর হুসাইন জারিফ একা এক ঘরে ঘুমাতো। আর তার মা-বাবা আলাদা আরেকটি ঘরে থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে জারিফ একা তার ঘরে  ঘুমিয়ে ছিল। গভীর রাতে তিনি তার ফেসবুকে ‘সরি?’ লিখে পোস্ট দিয়ে পরিবারের সবার অজান্তে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলে পড়ে। বিষয়টি পরিবারের লোকজন টের পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে ঝুলন্ত জারিফকে আড়া থেকে নিচে নামান। ততক্ষণে তিনি মারা যান।
নিহতের চাচাতো ভাই আবুল হাসান জানান, অন্তর হুসাইন জারিফ দুটি বিয়ে করেন। পারিবারিক কলহের জেরে প্রথম স্ত্রী ডিভোর্স দেন। পরে আবারও ফরিদপুর শহরে গোপনে আরেকটি বিয়ে করেন। ওই স্ত্রীও দুই মাস আগে ডিভোর্স দিয়ে চলে যায়। এরপর তিনি হাতাশায় ভুগছিল। ২০২২ সালে ৩০ ডিসেম্বর রাত ১টার দিকে আত্মহত্যার পক্ষে নিজের ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তখন আমরা ওকে অনেক বুঝিয়ে আত্মহত্যার পথ থেকে ফিরিয়ে আনি।
অন্তর হুসাইন জারিফ ওই স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন- আত্মহত্যা করা মহাপাপ নাকি, না সে বিষয়ে কিছু বলব না। সেটা যার যার বিশ্বাস। আমি প্রায় দেখছি কেউ আত্মহত্যা করলে অসংখ্য মানুষ তাকে গালি গালাজ করে, স্বার্থপর ডাকে, আগুনে পুড়বে, জাহান্নামে যাবে, কারো কথা চিন্তা করল না, কত খারাপ, ইস্টুপিট বলে। আমি বিশ্বাস করি আত্মহত্যা খারাপ। কিন্তু যেভাবে মানুষ কথা বলে তা আমাকে অত্যন্ত অবাক করে। আপনি কখনো আত্মহত্যা না করলে বুঝবেন না, মানুষ কোন পর্যায় গিয়ে আত্মহত্যা করে।
মানুষ কখন আত্মহত্যা করে জানেন? যখন নিজেকে অসহায় লাগে, মনে হয় কাউকে বলে শান্তি বা সমাধান কিছুই পাওয়া যাবে না। প্যানিক, অ্যাটাক, ডিপ্রেশন, স্টেজ একসাথে এসে আপনার মাথা খালি করে দেয়। শরীর অনবরত কাঁপতে থাকে, চোখে সব ঝাপসা লাগতে থাকে, মাথা প্রচুন্ড ভারি হয়ে থাকে, একসাথে লাখ লাখ কোটি কোটি জিনিস মাথায় এসে আবার একসাথে চলে যায়। প্রতি সেকেন্ড এমন হতে থাকে। ওই সময় কোনটা ঠিক কোনটা ঠিক না, এটা বোঝার ক্ষমতা থাকে না। এটা বোঝার ক্ষমতা থাকলে কেউ শখের বশে নিজেকে শেষ করতো না।
আপনি যাকে স্বার্থপর বলে গালি দিচ্ছেন, সে নিজেও জানে সে স্বার্থপর, কোনো কাজের না। নিজেকে এতো আহাম্মক আর অকেজো মনে করে বলেই হয়তো জীবন দিয়ে দেয়। আমি কিভাবে এতোকিছু জানি সে কথা বলবো না। কিন্তু এতটুকু বলতে পারবো আমার কথা ভুল হবে না। সুতরাং আত্মহত্যা খারাপ হতে পারে, আত্মহত্যা করা মানুষগুলো খারাপ না।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক বলেন, দুই মাস আগে স্ত্রী ডিভোর্স দিয়ে চলে যাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত ছিল জারিফ। এই কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানতে পেরেছি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।