জামালপুরে মৃত আইনজীবীর নাম সরকারি কৌঁসুলি তালিকায়, ত্রুটিপূর্ণ তালিকা বাতিলের দাবি

জামালপুর প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৯:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ৩৩ বার পড়া হয়েছে

জামালপুর জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলির (জিপি) তালিকায় একজন মৃত আইনজীবীর নাম উঠে আসায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। একইসঙ্গে একজনের নাম দুই পদে এবং আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে জামালপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। তারা দ্রুত এ ত্রুটিপূর্ণ তালিকা বাতিলের দাবি জানান।

মানববন্ধনে আইনজীবীদের বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতারা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি কৌঁসুলির তালিকায় মৃত আইনজীবী আনোয়ার হোসেনকে অতিরিক্ত জিপি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত পিপি পদে একজনের নাম দুইবার উল্লেখ করা হয়েছে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও নবনির্বাচিত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ফজলুল হক। তিনি বলেন, “তালিকায় এমন আইনজীবীদের নাম রয়েছে, যারা বার কাউন্সিলের সদস্য নন। অনেক আইনজীবী মিছিল-মিটিংয়ে আওয়ামী লীগের ব্যানার ধরে থাকেন, তাদেরকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এমনকি মৃত আইনজীবীর নামও তালিকায় এসেছে। এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।”

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দিদারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম মোহন ও মোবারক হোসেন।

১৩ নভেম্বর উপসলিসিটর মো. মাহরুফ হোসাইনের স্বাক্ষরিত তালিকায় জিপি, পিপি, এপিপি, এবং অন্যান্য পদে ৫৪ জন আইনজীবী নিয়োগ পান। এ তালিকায় এপিপি পদে অন্তর্ভুক্ত ছয়জন আইনজীবী—আব্দুল্লাহ আল আমিন, মো. রাসেল রানা, আঁখি আক্তার, তামিমা বিলকিস, হাবিবা সুলতানা, এবং সাবিনা ইয়াসমিন—আওয়ামীপন্থি বলে দাবি করে তাদের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানানো হয়।

বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতি আহ্বান জানান, যেন এই ত্রুটিপূর্ণ তালিকা গ্রহণ করা না হয়। পাশাপাশি তারা সুষ্ঠু যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নতুন তালিকা প্রকাশের দাবি করেন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। তবে আইনজীবীদের দাবি ও প্রতিবাদে প্রশাসন তালিকার ত্রুটি সংশোধনের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সরকারি আইন কর্মকর্তাদের এ তালিকা তৈরির পদ্ধতি নিয়ে এমন বিতর্ক এর আগে খুব কমই দেখা গেছে। বিষয়টি এখন জেলা প্রশাসন এবং বিচার বিভাগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জামালপুরে মৃত আইনজীবীর নাম সরকারি কৌঁসুলি তালিকায়, ত্রুটিপূর্ণ তালিকা বাতিলের দাবি

আপডেট সময় : ০৪:৫৯:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

জামালপুর জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলির (জিপি) তালিকায় একজন মৃত আইনজীবীর নাম উঠে আসায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। একইসঙ্গে একজনের নাম দুই পদে এবং আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।

রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে জামালপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। তারা দ্রুত এ ত্রুটিপূর্ণ তালিকা বাতিলের দাবি জানান।

মানববন্ধনে আইনজীবীদের বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতারা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি কৌঁসুলির তালিকায় মৃত আইনজীবী আনোয়ার হোসেনকে অতিরিক্ত জিপি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত পিপি পদে একজনের নাম দুইবার উল্লেখ করা হয়েছে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও নবনির্বাচিত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ফজলুল হক। তিনি বলেন, “তালিকায় এমন আইনজীবীদের নাম রয়েছে, যারা বার কাউন্সিলের সদস্য নন। অনেক আইনজীবী মিছিল-মিটিংয়ে আওয়ামী লীগের ব্যানার ধরে থাকেন, তাদেরকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এমনকি মৃত আইনজীবীর নামও তালিকায় এসেছে। এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।”

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দিদারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম মোহন ও মোবারক হোসেন।

১৩ নভেম্বর উপসলিসিটর মো. মাহরুফ হোসাইনের স্বাক্ষরিত তালিকায় জিপি, পিপি, এপিপি, এবং অন্যান্য পদে ৫৪ জন আইনজীবী নিয়োগ পান। এ তালিকায় এপিপি পদে অন্তর্ভুক্ত ছয়জন আইনজীবী—আব্দুল্লাহ আল আমিন, মো. রাসেল রানা, আঁখি আক্তার, তামিমা বিলকিস, হাবিবা সুলতানা, এবং সাবিনা ইয়াসমিন—আওয়ামীপন্থি বলে দাবি করে তাদের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানানো হয়।

বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতি আহ্বান জানান, যেন এই ত্রুটিপূর্ণ তালিকা গ্রহণ করা না হয়। পাশাপাশি তারা সুষ্ঠু যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নতুন তালিকা প্রকাশের দাবি করেন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। তবে আইনজীবীদের দাবি ও প্রতিবাদে প্রশাসন তালিকার ত্রুটি সংশোধনের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সরকারি আইন কর্মকর্তাদের এ তালিকা তৈরির পদ্ধতি নিয়ে এমন বিতর্ক এর আগে খুব কমই দেখা গেছে। বিষয়টি এখন জেলা প্রশাসন এবং বিচার বিভাগের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠেছে।