পাটুরিয়ায় গভীর রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, বালু ব্যবসায়ীকে জরিমানা, আটক তিন গ্রামবাসী
- আপডেট সময় : ০২:৩৭:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
মানিকগঞ্জের শিবালয়ের দাসকান্দি এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে বালু ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)-এর উদ্যোগে গভীর রাতে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২টা থেকে ২:৩০টা পর্যন্ত শিবালয় উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম ফয়েজ উদ্দিনের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে দাসকান্দি এলাকার একটি বালু চাতালে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে একটি আনলোড মেশিন, পাইপ, এবং একটি এক্সকেভেটর (ভেকু) ধ্বংস করা হয়। অভিযানের সময় তিন গ্রামবাসী—নূর আলী মাদবর, দেলোয়ার, এবং জুয়েল—কে আটক করা হয়।
অভিযানে জব্দ করা হয় একটি দশচাকার ড্রাম ট্রাক এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয় চাতালের বালু ব্যবসায়ী জসিম খানকে। পরে আটক তিন ব্যক্তিকে জনপ্রতি ৫০০ টাকা জরিমানা করে পরদিন ছেড়ে দেওয়া হয়।
অভিযানের সময় রাতে চিৎকার এবং ভাঙচুরের শব্দ শুনে এলাকাবাসী ডাকাত সন্দেহে লাঠিসোটা নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। স্থানীয় একজন ভয়ে নদীতে লাফিয়ে পড়েন। পরে এলাকাবাসী বুঝতে পারেন, এটি প্রশাসনের অভিযান। তবে, হঠাৎ গভীর রাতে এ ধরনের অভিযান নিয়ে তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
বালু ব্যবসায়ী জসিম খান জানান, “আমার পৈত্রিক জায়গায় বৈধভাবে বালু ব্যবসা করি। ইজারাদারের কাছ থেকে বালু কিনে আনলোড করি। অভিযানে আমার ভেকু, পাইপ, এবং আনলোড মেশিন ভেঙে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। অথচ আশপাশে আরও অনেক বালু ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা নদী থেকে সরাসরি বালু উত্তোলন করেন।”
তিনি আরও বলেন, তার ব্যবসার জায়গাটি ফোরশোরের অংশ কি না, তা নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান।
অভিযান পরিচালনাকারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম ফয়েজ উদ্দিন বলেন, “গভীর রাতে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। এটি কোনো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযান নয়। পর্যায়ক্রমে সব অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযানে জব্দ করা ড্রাম ট্রাক এবং জরিমানা আদায়ের বিষয়টি প্রশাসনের নিয়ম মেনেই সম্পন্ন হয়েছে।”
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা নদীবন্দরের উপ-পরিচালক মো. মামুন-অর-রশীদ বলেন, “অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ এবং সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়েছে, যাতে এই কার্যক্রম আরও জোরদার করা যায়।”
স্থানীয়রা প্রশাসনের এই কার্যক্রমকে সমর্থন জানালেও, গভীর রাতে এ ধরনের অভিযানে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, সবার প্রতি সমান আইনি পদক্ষেপ নিশ্চিত করলে প্রশাসনের প্রতি আস্থা আরও বাড়বে।