প্রধান শিক্ষককে হুমকি ও হত্যা মামলায় গ্রেফতার, পিরোজপুরে আলোচনার ঝড়
- আপডেট সময় : ০৩:৪৮:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫ ২৪ বার পড়া হয়েছে
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় চিংগুড়িয়া এন.আই.এইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফেজ মো. ওমর ফারুককে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার হুমকি এবং পরবর্তীতে ঢাকার মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আশরাফুল ইসলাম হত্যা মামলায় গ্রেফতার নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের পরিবার ও সহকর্মীরা দাবি করেছেন, তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তিনি ঘটনার দিন ৪ আগস্ট নিজ বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ রয়েছে।
এ ঘটনায় একটি হুমকির অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার হোসেন মাসুদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের কথোপকথনের ওই অডিওতে হুমকি দিয়ে বলা হয়, “তোমাকে ঢাকার সব নোংরা মামলায় জড়ানো হবে। প্রতি সপ্তাহে ওয়ারেন্ট যাবে, জামিন নেবে, সাসপেন্ড হবে।”
প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী ফাতিমা খানম বলেন, “আমার স্বামী নিরীহ মানুষ। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে সাবেক সভাপতি আখতার হোসেন মাসুদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ষড়যন্ত্র করে তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।”
সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন মোল্লা জানান, “ঘটনার দিন আমরা সকলে বিদ্যালয়ে ছিলাম। প্রধান শিক্ষকও আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় আসামি করা হয়েছে।”
ভান্ডারিয়া থানার ওসি আহমদ আনওয়ার জানান, “মিরপুর থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ওমর ফারুককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন আরাফাত রানা বলেন, “আমার জানা মতে তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। সাবেক সভাপতির সঙ্গে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটতে পারে।”
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অ্যাডভোকেট আখতার হোসেন মাসুদ পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মঠবাড়িয়া-ভান্ডারিয়া সার্কেল) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “প্রধান শিক্ষক মো. ওমর ফারুক মিরপুর মডেল থানার আশরাফুল ইসলাম হত্যা মামলার ৪০ নম্বর আসামি।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পিরোজপুরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। প্রধান শিক্ষকের মুক্তি ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে স্থানীয়রা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।