আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না: তারেক রহমান
- আপডেট সময় : ০৩:১৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ৩০ বার পড়া হয়েছে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না। অন্যদিকে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সর্বদা নিরাপদ।”
সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বার্ষিক সাধারণ সভায় যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তারেক রহমান ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে চলমান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যাত্রায় সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের যাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। বিতাড়িত স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে। তবে আমরা সবাই যদি সতর্ক থাকি, গণতন্ত্রের স্বপক্ষের শক্তির মধ্যে কোনো ভুল বোঝাবুঝি থাকবে না।”
সংস্কারের গুরুত্ব:
তারেক রহমান বলেন, “সংস্কার কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিএনপি মনে করে, গুণগত রাজনৈতিক সংস্কৃতি ছাড়া পুঁথিগত সংস্কার কার্যকর হয় না। ২০২২ সালে আমরা প্রথম ২৭ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলাম এবং ২০২৩ সালে তা উন্নীত করে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করেছি।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “সংস্কার আগে না নির্বাচন আগে—এ ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে জনমনে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। তবে বিএনপি মনে করে সুষ্ঠু নির্বাচনই গণতন্ত্রের মূল চাবিকাঠি।”
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা:
তারেক রহমান বলেন, “গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী মিডিয়া কমিশন গঠন করার প্রস্তাব বিএনপি দিয়েছে। আমরা চাই এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে এবং বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকবে।”
গণহত্যার অভিযোগ:
তার বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, “বিগত সময় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা ও গুম করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগের নির্দেশে ৩০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।”
ভিন্নমত দমনের সমালোচনা:
তারেক রহমান বলেন, “গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সৌন্দর্য হলো ভিন্নমত গ্রহণ করা। কিন্তু দেড় দশক ধরে ভিন্নমত দমন করে গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ করা হয়েছে। জনগণ এই বাস্তবতা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
তারেক রহমান বলেন, “আওয়ামী লীগকে আইনি লড়াই এবং জনগণের ভোটের মাধ্যমে বিদায় করতে হবে। আমরা এমন একটি সমাজ গড়ে তুলতে চাই, যেখানে সকল নাগরিক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে রাষ্ট্রের মালিকানা অনুভব করবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ আরও অনেক বিশিষ্টজন।
সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান:
তারেক রহমান সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা বজায় রাখুন এবং রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে দায়িত্ব পালন করুন।”
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রয়াত সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।