সেই দুই বোন ‘আসক্ত ছিল’ ক্রাইম পেট্রোলে
- আপডেট সময় : ০৯:৪৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ৩২২ বার পড়া হয়েছে
সিলেটে দুই বোনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর তাদের মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা- এ নিয়েও নানা প্রশ্ন। আত্মহত্যা যদি হয়েই থাকে একসঙ্গে দুই বোন এমন করবে কেন- এমন প্রশ্ন অনেকের।
তাদের পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা বলছেন, ক্রাইম পেট্রোলসহ নানা গোয়েন্দা সিরিয়ালে আসক্ত ছিল দুই বোন।
পারিবারিক কলহ প্রায়ই লেগে থাকত। সম্পদের ভবিষ্যৎ মালিকানা নিয়েও পরিবারে অসন্তোষ ছিল অনেক দিন ধরে। তবে দুই বোন চাপা স্বভাবের হওয়ায় এসব তেমন বলত না প্রতিবেশীদের সঙ্গেও। দুই বোনের মধ্যে রানী বেগম বড় ও ফাতেমা বেগম ছোট। রানী নবম শ্রেণি ও ফাতেমা মাস্টার্স পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিল।
সোমবার সকালে ছাদের উপর থেকে দুই বোনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। তারা সিলেট নগরীর ৪নং ওয়ার্ডের আম্বরখানা মজুমদারি এলাকায় ৩১নং বাসার কলিম উল্লাহর মেয়ে।
রানী ও ফাতেমার ভাই শেখ রাজনের দাবি, দুই বোনের মধ্যে রানীর রাগ খুব বেশি ছিল। মাথায়ও কিছু সমস্যা ছিল। ফাতেমাকেও হয়ত রানীই আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে। মারা যাওয়া দুই বোন ঘরের দরজা লাগিয়ে ক্রাইম পেট্রোলসহ বিদেশি টিভি চ্যানেলের গোয়েন্দা সিরিয়ালগুলো দেখত প্রায়ই। রোববার এক বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল। বর লন্ডনি, তবে দুই বাচ্চার পিতা। এ প্রস্তাব আসার পর রানী উত্তেজিত হয়ে উঠে। বিয়ের প্রস্তাব মাত্র এসেছে, বিয়ে তো হয়নি- এমন কথা বলেও তাকে শান্ত করা যায়নি। রাগ করে রানী ফাতেমাকে নিয়ে চাচার বাসায় চলে যায়। এরপর পরদিন সোমবার সকালে পাশের বাসার লোকজন জানায় রানী ও ফাতেমার লাশ ছাদে ঝুলছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েছ লোদির প্রশ্ন- রাতে কী এমন ঘটল যে, তরুণী দুই বোন রাতে ঘর ছেড়ে অন্যের ঘরে আশ্রয় নিতে হলো? এরপর সকালে ছাদের উপর পাওয়া গেল দুই বোনের ঝুলন্ত লাশ। এতবড় ঘটনা আত্মহত্যা বলে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। যদি আত্মহত্যা হয়েও থাকে রাতে বাসা থেকে বের হওয়ার মতো পরিস্থিতি কেন, কারা তৈরি করেছিল, কারা আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে অন্তত সেটুকু বেরিয়ে আসা দরকার।
তিনি বলেন, মারা যাওয়া দুই যুবতী মেয়ের স্বজনসহ এলাকার সবাই বিস্মিত আকস্মিক এ ঘটনায়।
তিনি জানান, দুই বোনকে রাতেই বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিলেন চাচাতো ভাই। কিন্তু রানী ও ফাতেমা রাজি হননি। তারা চাচাতো ভাইকে বলেছিলেন- তুমি যেওনা, গেলে তোমাকেও তারা মেরে ফেলবে। এই ‘তারা’ আসলে কারা? কে তাদের মারতে চেয়েছিল? এটা তদন্তে বেরিয়ে আসা উচিত।
কাউন্সিলর লোদী বলেন, ঘটনার পরপরই পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য ছিল পরস্পরবিরোধী, অসংলগ্ন। কারও সঙ্গে কারও কথার মিল নেই। একেকজনের বক্তব্য একেকরকম। প্রতিবেশীদের সঙ্গে পরিবারটির সামাজিক সম্পর্ক নেই বললেই চলে।
এয়ারপোর্ট থানার ওসি খান মোহাম্মদ মাইনুল জাকির যুগান্তরকে বলেন, তদন্ত চলছে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।