7:29 am, Wednesday, 19 March 2025

২৫ বছর পর মা-বাবার খোঁজ পেলেন আকলিমা

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:07:23 am, Thursday, 23 September 2021
  • 261 Time View

পঁচিশ বছর পর মা-বাবার খোঁজ পেলেন ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূর (৩১)। সে উপজেলা পাগলা থানাধীন লংগাইর ইউনিয়নের মাইজবাড়ি গ্রামের মানিক মিয়ার মেয়ে।

১৯৯৬ সালে ছয় বছর বয়সে বাবার সঙ্গে ঢাকায় বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে যান আকলিমা ওরফে আখি নূর। সম্পতি আপন ঠিকানা আর জে কিবরিয়ার এফএম রেডিও উপস্থাপনায় আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের সাক্ষাতকার নেন।

সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের সন্ধ্যান পান তার বাবা মানিক মিয়া। মানিক মিয়ার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূর এখন আশুলিয়া এলাকার মাসুম মোল্লার স্ত্রী। তিনি বর্তমানে দুই সন্তানের জননী।

আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূর স্বামী সন্তান নিয়ে এখন তার বাবার বাড়ি গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাথীন মাইজ বাড়ি গ্রামে বেড়াতে এসেছেন।

আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের বাবা মানিক মিয়া (৬০) জানান, ১৯৯৬ সালে মেয়ে আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরেক নিয়ে ঢাকায় বেড়াতে যান তিনি। তখন আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের বয়স ছিল ছয় বছর। গুলিস্তান মোড়ে একটি পান দোকানের সামনে আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরকে দাঁড় করিয়ে প্রকৃতির ডাকা সাড়া দিতে একটু সামনে মানিক মিয়া।সেখানে তিনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন।

ছিনতাইকারীরা দীর্ঘ সময় আটকে রেখে টাকা পয়সা কেড়ে নিয়ে মানিক মিয়াকে ছেড়ে দেয়। ততক্ষণে সেখান থেকে আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূর হারিয়ে যান।

মানিক মিয়া আরো জানান, ওই সময় আমার হারিয়ে যাওয়া আকলিমা ওরফে আঁখি নূরকে বহু জায়গায় খোঁজাখুজি করেছি। আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরকে খুঁজে পেতে ঢাকা মাইকিং করেছি। থানায় জিডি করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। কিন্তু কোনো সন্ধান পাইনি। মেয়েকে না পেয়ে পঁচিশ বছর ধরে বুকে কষ্ট চাপা দিয়ে রেখেছি। মেয়ের খোঁজ না পেয়ে নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিলাম না। এখন মেয়েকে পেয়ে আমি আর জে কিবরিয়ার এফএম রেডিওর প্রতি কৃতজ্ঞ।

আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূর বলেন, ওই সময় হারিয়ে যাওয়ার পর আমি বাবাকে না পেয়ে একটি বাসে উঠে পড়ি। বাসে উঠে কান্নাকাটি করার সময় এক লোক আমাকে নিয়ে যান। পরে ওই লোক একটি আশ্রয় কেন্দ্রে আমাকে দিয়ে আসেন।

আশ্রয় কেন্দ্রে আকলিমা থেকে আঁখি নূর নামে বড় হয়ে ওঠেন তিনি। সেখানে থেকে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী মাসুম মোলার সঙ্গে সংসার জীবনে শুরু করেন। বর্তমানে তিনি এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানেরর জননী।

বাবা মার সন্ধানের আশায় আপন ঠিকানা আরজে কিবরিয়ার এফএম রেডিওতে সাক্ষাৎকারের জন্য আবেদন করেন আখি নূর। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর সাক্ষাৎকারের ডাক পড়ে তার। দীর্ঘ পঁচিশ বছর পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার আকলিমা ওরফে আঁখি নূর খোঁজে পান বাবা মার।

আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের স্বামী মাসুম মোল্লা বলেন, আমি সব কিছু জেনেই তাকে বিয়ে করে ছিলাম। বিয়ের পর থেকে আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের বাবা-মার সন্ধানের জন্য অনেক জায়গায় ছোটাছুটি করেছে, শ্বশুর শাশুরি পেয়ে আমি খুশি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

২৫ বছর পর মা-বাবার খোঁজ পেলেন আকলিমা

Update Time : 01:07:23 am, Thursday, 23 September 2021

পঁচিশ বছর পর মা-বাবার খোঁজ পেলেন ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূর (৩১)। সে উপজেলা পাগলা থানাধীন লংগাইর ইউনিয়নের মাইজবাড়ি গ্রামের মানিক মিয়ার মেয়ে।

১৯৯৬ সালে ছয় বছর বয়সে বাবার সঙ্গে ঢাকায় বেড়াতে গিয়ে হারিয়ে যান আকলিমা ওরফে আখি নূর। সম্পতি আপন ঠিকানা আর জে কিবরিয়ার এফএম রেডিও উপস্থাপনায় আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের সাক্ষাতকার নেন।

সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের সন্ধ্যান পান তার বাবা মানিক মিয়া। মানিক মিয়ার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূর এখন আশুলিয়া এলাকার মাসুম মোল্লার স্ত্রী। তিনি বর্তমানে দুই সন্তানের জননী।

আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূর স্বামী সন্তান নিয়ে এখন তার বাবার বাড়ি গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাথীন মাইজ বাড়ি গ্রামে বেড়াতে এসেছেন।

আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের বাবা মানিক মিয়া (৬০) জানান, ১৯৯৬ সালে মেয়ে আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরেক নিয়ে ঢাকায় বেড়াতে যান তিনি। তখন আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের বয়স ছিল ছয় বছর। গুলিস্তান মোড়ে একটি পান দোকানের সামনে আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরকে দাঁড় করিয়ে প্রকৃতির ডাকা সাড়া দিতে একটু সামনে মানিক মিয়া।সেখানে তিনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন।

ছিনতাইকারীরা দীর্ঘ সময় আটকে রেখে টাকা পয়সা কেড়ে নিয়ে মানিক মিয়াকে ছেড়ে দেয়। ততক্ষণে সেখান থেকে আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূর হারিয়ে যান।

মানিক মিয়া আরো জানান, ওই সময় আমার হারিয়ে যাওয়া আকলিমা ওরফে আঁখি নূরকে বহু জায়গায় খোঁজাখুজি করেছি। আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরকে খুঁজে পেতে ঢাকা মাইকিং করেছি। থানায় জিডি করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। কিন্তু কোনো সন্ধান পাইনি। মেয়েকে না পেয়ে পঁচিশ বছর ধরে বুকে কষ্ট চাপা দিয়ে রেখেছি। মেয়ের খোঁজ না পেয়ে নিজেকে ক্ষমা করতে পারছিলাম না। এখন মেয়েকে পেয়ে আমি আর জে কিবরিয়ার এফএম রেডিওর প্রতি কৃতজ্ঞ।

আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূর বলেন, ওই সময় হারিয়ে যাওয়ার পর আমি বাবাকে না পেয়ে একটি বাসে উঠে পড়ি। বাসে উঠে কান্নাকাটি করার সময় এক লোক আমাকে নিয়ে যান। পরে ওই লোক একটি আশ্রয় কেন্দ্রে আমাকে দিয়ে আসেন।

আশ্রয় কেন্দ্রে আকলিমা থেকে আঁখি নূর নামে বড় হয়ে ওঠেন তিনি। সেখানে থেকে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী মাসুম মোলার সঙ্গে সংসার জীবনে শুরু করেন। বর্তমানে তিনি এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানেরর জননী।

বাবা মার সন্ধানের আশায় আপন ঠিকানা আরজে কিবরিয়ার এফএম রেডিওতে সাক্ষাৎকারের জন্য আবেদন করেন আখি নূর। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর সাক্ষাৎকারের ডাক পড়ে তার। দীর্ঘ পঁচিশ বছর পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার আকলিমা ওরফে আঁখি নূর খোঁজে পান বাবা মার।

আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের স্বামী মাসুম মোল্লা বলেন, আমি সব কিছু জেনেই তাকে বিয়ে করে ছিলাম। বিয়ের পর থেকে আকলিমা খাতুন ওরফে আঁখি নূরের বাবা-মার সন্ধানের জন্য অনেক জায়গায় ছোটাছুটি করেছে, শ্বশুর শাশুরি পেয়ে আমি খুশি।