11:06 am, Wednesday, 19 March 2025

গোয়ালন্দ হাসপাতালে রাতে চিকিৎসার জন্য আসা রোগী ও স্বজনদের চরম ভোগান্তি

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:43:18 pm, Sunday, 31 October 2021
  • 198 Time View
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  রাতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
হাসপাতালের আশপাশে থাকা ১০ টি ফার্মেসীর সবগুলো রাতে বন্ধ থাকায় জরুরি ওষুধ ও চিকৎসা সামগ্রীর অভাবে এ ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
জানা গেছে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত অত্যন্ত ব্যস্ততম হাসপাতাল গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সড়ক দূর্ঘটনা সহ বিভিন্ন জরুরি রোগীকে দিনরাত সব সময় এ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। কিন্তু রাতের বেলায় রোগী ও রোগীর স্বজনরা জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী না পেয়ে বিপাকে পড়েন। ব্যাহত হয় চিকিৎসা কার্যক্রম।
দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রশিদ জানান,কয়েকদিন আগে রাত সারে ১২ টার দিকে  তিনি তার এক স্বজনকে ডায়রিয়া ও পেটে ব্যাথা জনিত সমস্যায় হাসপাতালে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগ হতে ওষুধ ও স্যালাইন আনতে বলে।কিন্তু বাইরের সকল ফার্মেসি বন্ধ দেখে নিকটবর্তী মিনার মাহমুদ নামের এক ওষুধ ব্যাবসায়ীর বাড়িতে গিয়ে তাকে ডেকে এনে ওষুধ ও স্যালাইন সংগ্রহ করি। সেই রাতে নিজেকে খুব অসহায় মনর হয়েছিল। মনে হয়েছিল এগুলো দেখার কেউ নেই।
উপজেলার দৌলতদিয়া শাহাদাত মেম্বার পাড়ার বাসিন্দা লাখি বেগম (৪০) জানান, তার ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে মিতু (১৭) গত বুধবার অসুস্থ্য হয়ে পড়লে আমরা তাকে দ্রুত গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করি। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ২ টার দিকে মিতুর পেটে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়। কর্তব্যরত ডাক্টারকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি এসে দুটো ওষুধ লিখে দেন।নার্স স্লীপ লিখে ওষুধ দুটো  বাইরের ফার্মেসী থেকে আনতে বলেন।কিন্তু ফার্মেসি বন্ধ থাকায় ওষুধ বিনে তার মেয়ে ব্যাথায় প্রচন্ড কষ্ট পায়।শুক্রবার সকালে ফার্মেসি খুললে আমরা সেই ওষুধ সংগ্রহ করি।
উপজেলার নগর রায়ের পাড়ার কৃষক জগদীশ রায় জানান, তার মেয়ে ঈশিতাকে (৭) প্রচন্ড দাতের ব্যাথার জন্য  শুক্রবার ভোর  রাত ৪ টার দিকে গোয়ালন্দ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।
 সেখান থেকে কিছু ওষুধ লিখে বাইরের ফার্মেসী হতে কিনতে বলে। কিন্তু বাইরের সকল ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় আমি ওষুধগুলো কিনতে পারিনি। ফলে অসহায়ের মতো সকালে ফার্মেসি খোলা পর্যন্ত মেয়ের কান্নাকাটি সহ্য করে যেতে হয়।
হাসপাতাল গেটের ওষুধ ব্যাবসায়ী আলাউদ্দিন ফকির জানান, একটা নিয়ম করে প্রতি রাতে অন্তত একটি ফার্মেসি খোলা রাখার ব্যবস্থা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে আমি নিয়ম মেনে চলতে রাজি আছি।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আসিফ মাহমুদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে  ওষুধ ব্যাবসায়ীদের অনেকবার বলেছি।কিন্তু তারা কথা শোনে না।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল হক খান মামুন জানান, বিষয়টি তার নজরে ছিল না। কেউ কোনদিন কিছু বলেও নি।তবে আজকের মধ্যেই (রবিবার) হাসপাতাল সংলগ্ন সকল ওষুষ ব্যাবসায়ীকে তলব করে সকল ফার্মেসী ২৪ ঘন্টা খোলা রাখার ব্যবস্থা নেব।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

গোয়ালন্দ হাসপাতালে রাতে চিকিৎসার জন্য আসা রোগী ও স্বজনদের চরম ভোগান্তি

Update Time : 05:43:18 pm, Sunday, 31 October 2021
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  রাতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
হাসপাতালের আশপাশে থাকা ১০ টি ফার্মেসীর সবগুলো রাতে বন্ধ থাকায় জরুরি ওষুধ ও চিকৎসা সামগ্রীর অভাবে এ ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
জানা গেছে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত অত্যন্ত ব্যস্ততম হাসপাতাল গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সড়ক দূর্ঘটনা সহ বিভিন্ন জরুরি রোগীকে দিনরাত সব সময় এ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। কিন্তু রাতের বেলায় রোগী ও রোগীর স্বজনরা জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী না পেয়ে বিপাকে পড়েন। ব্যাহত হয় চিকিৎসা কার্যক্রম।
দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রশিদ জানান,কয়েকদিন আগে রাত সারে ১২ টার দিকে  তিনি তার এক স্বজনকে ডায়রিয়া ও পেটে ব্যাথা জনিত সমস্যায় হাসপাতালে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগ হতে ওষুধ ও স্যালাইন আনতে বলে।কিন্তু বাইরের সকল ফার্মেসি বন্ধ দেখে নিকটবর্তী মিনার মাহমুদ নামের এক ওষুধ ব্যাবসায়ীর বাড়িতে গিয়ে তাকে ডেকে এনে ওষুধ ও স্যালাইন সংগ্রহ করি। সেই রাতে নিজেকে খুব অসহায় মনর হয়েছিল। মনে হয়েছিল এগুলো দেখার কেউ নেই।
উপজেলার দৌলতদিয়া শাহাদাত মেম্বার পাড়ার বাসিন্দা লাখি বেগম (৪০) জানান, তার ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে মিতু (১৭) গত বুধবার অসুস্থ্য হয়ে পড়লে আমরা তাকে দ্রুত গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করি। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ২ টার দিকে মিতুর পেটে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়। কর্তব্যরত ডাক্টারকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি এসে দুটো ওষুধ লিখে দেন।নার্স স্লীপ লিখে ওষুধ দুটো  বাইরের ফার্মেসী থেকে আনতে বলেন।কিন্তু ফার্মেসি বন্ধ থাকায় ওষুধ বিনে তার মেয়ে ব্যাথায় প্রচন্ড কষ্ট পায়।শুক্রবার সকালে ফার্মেসি খুললে আমরা সেই ওষুধ সংগ্রহ করি।
উপজেলার নগর রায়ের পাড়ার কৃষক জগদীশ রায় জানান, তার মেয়ে ঈশিতাকে (৭) প্রচন্ড দাতের ব্যাথার জন্য  শুক্রবার ভোর  রাত ৪ টার দিকে গোয়ালন্দ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।
 সেখান থেকে কিছু ওষুধ লিখে বাইরের ফার্মেসী হতে কিনতে বলে। কিন্তু বাইরের সকল ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় আমি ওষুধগুলো কিনতে পারিনি। ফলে অসহায়ের মতো সকালে ফার্মেসি খোলা পর্যন্ত মেয়ের কান্নাকাটি সহ্য করে যেতে হয়।
হাসপাতাল গেটের ওষুধ ব্যাবসায়ী আলাউদ্দিন ফকির জানান, একটা নিয়ম করে প্রতি রাতে অন্তত একটি ফার্মেসি খোলা রাখার ব্যবস্থা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে আমি নিয়ম মেনে চলতে রাজি আছি।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আসিফ মাহমুদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে  ওষুধ ব্যাবসায়ীদের অনেকবার বলেছি।কিন্তু তারা কথা শোনে না।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল হক খান মামুন জানান, বিষয়টি তার নজরে ছিল না। কেউ কোনদিন কিছু বলেও নি।তবে আজকের মধ্যেই (রবিবার) হাসপাতাল সংলগ্ন সকল ওষুষ ব্যাবসায়ীকে তলব করে সকল ফার্মেসী ২৪ ঘন্টা খোলা রাখার ব্যবস্থা নেব।