১১:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলায় প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষনের মামলা

আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় আতংঙ্কিত ধর্ষিতা ওই নারী ও তার পরিবার

মোংলা বন্য ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও চাদঁপাই ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির মল্লিকের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষনের মামলা হয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারীকে ৩০ ডিসেম্বর রাতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পুর্বক ধর্ষন করে প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির মল্লিক।

ঘটনার পর পরই থানায় এজাহার দাখিল করলেও ক্ষমতাবান ওই প্যানেল চেয়ারম্যানের দাপটে মামলা রুজুতে বিলম্ভ হয়, তবে তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় অবশেষে ১০ জানুয়ারী মামলা রুজু করে মোংলা থানা পুলিশ। মামলা দয়েরের ৫দিন অতিবাহিত হলেও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় আতংঙ্কে রয়েছে ধর্ষিতা নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা। এ নিয়ে মালগাজী মিশনবাড়ী এলাকার সাধারন মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, আসামী জাহাঙ্গির মল্লিক এক সময়ের বিএনপির যুব দল থেকে আওয়ামীলীগের যোগদান করেন বছর সাতের আগে। ক্ষমতাশীন দলে এসে কৌশলে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ দখল করে নেয় এবং ৫নং ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। এর পর থেকেই তার ক্ষমতার বিস্তার শুরু করে স্থানীয় হিন্দ্র খ্রিস্টান সম্প্রদয়ের উপর। ধর্ষিতা ওই নারী ও জাহাঙ্গির মল্লিক একই এলাকায় বসবাস করার সুবাধে তাদের উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরী হয় এবং গত ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর তার পুর্বে স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় জাহাঙ্গীর মল্লিকের মধ্যস্থতায়।

এর পর থেকেই নারীলোভী লম্পট জাহারঙ্গীর মল্লিকের ললুপ দৃষ্টি পরে ওই নারীর উপর। বিয়েরর প্রলোভন দিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। আসামী জাহাঙ্গির তাকে বিবাহ করার প্রতিশ্রতি দিয়ে প্রথমে গত ২০১৭ সালে ৩০ ডিসেম্বর গভির রাতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষন করে বলে মামলায় উল্লেখ করে। ওই নারী খ্রিস্টান সম্প্রদয়ের হওয়ার তার অসহায়াত্তের সুযোগ নিয়ে জিম্মি করে দিনের পর দিন জোর পূর্বক শারীরিক ভাবে মেলামেশা করে আসছে মেম্বার জাহাঙ্গির মল্লিক।

পরে তাকে বিবাহের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে গত বছরের ১৭ জানয়ারী একটি মিথ্যা নোটারী পাবলিক কার্যলয়ের দেয়া এক লক্ষ টাকার বিবাহ সংক্রান্ত এ্যাফিডেভিট কপি এনে দেয় বলে জানায় নির্যাতিতা ওই নারী। তার এহেনও মিথ্যা সাজানো ঘটনা বুঝতে পেরে বিষয়টি স্থানীয় চাদঁপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা তারিকুল ইসলামকে জানানো হয় এবং এ ঘটনা নিয়ে এলাকার স্থানীয়দের মাঝে জানা জানী হয় মর্মে ওই নারী বলেন। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরলে মেম্বার ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে জাহাঙ্গির মল্লিক তার ঘরে ডুকে মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক তাকে ধর্ষন করে বলে মামলার এজাহার থেকে জানা যায়। এ সময় ডাক চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এসে তাকে ঝাপটে ধরতে গেলে জাহাঙ্গির মল্লিক ঘর থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায় বলে মামলায় উল্লেক করা হয়ছে।

ঘটনার পর পরই থানায় এজাহার দাখিল করা হলে তদন্তের ৫ দিন শেষে জাহাঙ্গির মল্লিকের বিরুদ্ধে ধর্ষনের মামলা রুজু করে মোংলা থানা পুলিশ। তবে এখনও আসামী গ্রেফতার না হয়োয় এবং ধর্ষক মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রকাশ্য হুমকিতে নিরাপত্তা হিনতায় মধ্যে আতংঙ্কে রয়েছে নির্যাতনের শিকার ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা।

এব্যাপারে ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান আসামী জাহাঙ্গির মল্লিক বলেন, আমার সাথে ওই নারী পুর্ব পরিচিত কিন্ত যে ঘটনা নিয়ে মামলা করা হয়েছে তা সম্পুর্নটাই মিথ্যা। আমার সাথে ইউপি নির্বাচনে হেরে গিয়ে প্রতিপক্ষ আমাকে হেয়প্রতিপন্য করার চেষ্টা করছে।

চাদঁপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা তারিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে থেকেই এ ঘটনা আমাকে জানানো হয়েছিল কিন্ত জাহাঙ্গির মল্লিক তার কর্মকান্ডে আমি হতবাক। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এরকম কর্মকান্ড কোন রকমই সমচিন নয়। এখন মামলা হয়েছে, সত্যতা পেলে আদালতই এর সুষ্ঠ বিচার করবে।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম বলেন, মালগাজী এলাকার স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারীর অভিযোগের সুত্র ধরে তদন্ত করা হয়েছে এবং জাহাঙ্গির মল্লিক এ ঘটনার সাথে জরিত থাকার সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হয়েছে। আসামী পলাতক থাকায় আটক হচ্ছে না তবে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানায় থানার এ কর্মকর্তা।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

মোংলায় প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষনের মামলা

Update Time : ১১:৫২:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২২

মোংলা বন্য ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও চাদঁপাই ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির মল্লিকের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষনের মামলা হয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারীকে ৩০ ডিসেম্বর রাতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পুর্বক ধর্ষন করে প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির মল্লিক।

ঘটনার পর পরই থানায় এজাহার দাখিল করলেও ক্ষমতাবান ওই প্যানেল চেয়ারম্যানের দাপটে মামলা রুজুতে বিলম্ভ হয়, তবে তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় অবশেষে ১০ জানুয়ারী মামলা রুজু করে মোংলা থানা পুলিশ। মামলা দয়েরের ৫দিন অতিবাহিত হলেও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় আতংঙ্কে রয়েছে ধর্ষিতা নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা। এ নিয়ে মালগাজী মিশনবাড়ী এলাকার সাধারন মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, আসামী জাহাঙ্গির মল্লিক এক সময়ের বিএনপির যুব দল থেকে আওয়ামীলীগের যোগদান করেন বছর সাতের আগে। ক্ষমতাশীন দলে এসে কৌশলে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ দখল করে নেয় এবং ৫নং ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। এর পর থেকেই তার ক্ষমতার বিস্তার শুরু করে স্থানীয় হিন্দ্র খ্রিস্টান সম্প্রদয়ের উপর। ধর্ষিতা ওই নারী ও জাহাঙ্গির মল্লিক একই এলাকায় বসবাস করার সুবাধে তাদের উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরী হয় এবং গত ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর তার পুর্বে স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় জাহাঙ্গীর মল্লিকের মধ্যস্থতায়।

এর পর থেকেই নারীলোভী লম্পট জাহারঙ্গীর মল্লিকের ললুপ দৃষ্টি পরে ওই নারীর উপর। বিয়েরর প্রলোভন দিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে। আসামী জাহাঙ্গির তাকে বিবাহ করার প্রতিশ্রতি দিয়ে প্রথমে গত ২০১৭ সালে ৩০ ডিসেম্বর গভির রাতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষন করে বলে মামলায় উল্লেখ করে। ওই নারী খ্রিস্টান সম্প্রদয়ের হওয়ার তার অসহায়াত্তের সুযোগ নিয়ে জিম্মি করে দিনের পর দিন জোর পূর্বক শারীরিক ভাবে মেলামেশা করে আসছে মেম্বার জাহাঙ্গির মল্লিক।

পরে তাকে বিবাহের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে গত বছরের ১৭ জানয়ারী একটি মিথ্যা নোটারী পাবলিক কার্যলয়ের দেয়া এক লক্ষ টাকার বিবাহ সংক্রান্ত এ্যাফিডেভিট কপি এনে দেয় বলে জানায় নির্যাতিতা ওই নারী। তার এহেনও মিথ্যা সাজানো ঘটনা বুঝতে পেরে বিষয়টি স্থানীয় চাদঁপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা তারিকুল ইসলামকে জানানো হয় এবং এ ঘটনা নিয়ে এলাকার স্থানীয়দের মাঝে জানা জানী হয় মর্মে ওই নারী বলেন। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরলে মেম্বার ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে জাহাঙ্গির মল্লিক তার ঘরে ডুকে মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক তাকে ধর্ষন করে বলে মামলার এজাহার থেকে জানা যায়। এ সময় ডাক চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এসে তাকে ঝাপটে ধরতে গেলে জাহাঙ্গির মল্লিক ঘর থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায় বলে মামলায় উল্লেক করা হয়ছে।

ঘটনার পর পরই থানায় এজাহার দাখিল করা হলে তদন্তের ৫ দিন শেষে জাহাঙ্গির মল্লিকের বিরুদ্ধে ধর্ষনের মামলা রুজু করে মোংলা থানা পুলিশ। তবে এখনও আসামী গ্রেফতার না হয়োয় এবং ধর্ষক মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রকাশ্য হুমকিতে নিরাপত্তা হিনতায় মধ্যে আতংঙ্কে রয়েছে নির্যাতনের শিকার ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যরা।

এব্যাপারে ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান আসামী জাহাঙ্গির মল্লিক বলেন, আমার সাথে ওই নারী পুর্ব পরিচিত কিন্ত যে ঘটনা নিয়ে মামলা করা হয়েছে তা সম্পুর্নটাই মিথ্যা। আমার সাথে ইউপি নির্বাচনে হেরে গিয়ে প্রতিপক্ষ আমাকে হেয়প্রতিপন্য করার চেষ্টা করছে।

চাদঁপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা তারিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে থেকেই এ ঘটনা আমাকে জানানো হয়েছিল কিন্ত জাহাঙ্গির মল্লিক তার কর্মকান্ডে আমি হতবাক। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এরকম কর্মকান্ড কোন রকমই সমচিন নয়। এখন মামলা হয়েছে, সত্যতা পেলে আদালতই এর সুষ্ঠ বিচার করবে।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম বলেন, মালগাজী এলাকার স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারীর অভিযোগের সুত্র ধরে তদন্ত করা হয়েছে এবং জাহাঙ্গির মল্লিক এ ঘটনার সাথে জরিত থাকার সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হয়েছে। আসামী পলাতক থাকায় আটক হচ্ছে না তবে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানায় থানার এ কর্মকর্তা।