ভগ্নিপতির পাওনা টাকা চাওয়ায় প্রাণ গেল গৃহবধু চায়নার
- আপডেট সময় : ০৫:৪৭:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ২০৩ বার পড়া হয়েছে
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে চায়না খাতুন (৩০) নামে দুই কন্যা সন্তানের জননী গৃহবধুর অপমৃত্যুর ঘটনায় থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা দায়ের (মামলা নং ২০, ধারা ৩০৬, পেনাল কোড) হয়েছে। ১২ ফেরুয়ারি শনিবার রাতে গৃহবধুর ভাই জাহাঙ্গীর দেওয়ান (২৮) বাদী হয়ে এ মামলা দায়েরকরেন।
মামলায় একমাত্র আসামী করা হয়েছে গৃহবধুর স্বামী রেজাউল শেখকে (৩০)। সে উপজেলার দৌলতদিয়া যদুফকির পাড়ার আফছার শেখের ছেলে। শনিবার সকালে স্বামীর ঘর থেকে পুলিশ গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এক মাস আগে চায়না খাতুনের ভগ্নিপতি আক্কাস মোল্লার কাছ থেকে রেজাউল শেখ ৩ হাজার টাকা ধার নেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা ফেরত দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফেরত না দিয়ে সে নানা তাল বাহানা করতে থাকে। এ নিয়ে চায়না কথা বললে তাকে ইতিপূর্বে কয়েক বার শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালায় রেজাউল। গত শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে রেজাউল বাড়ী ফিরলে তার স্ত্রী চায়না পূণরায় ওই টাকার কথা তোলে। এ নিয়ে দুজনার মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এ সময় রেজাউল তার স্ত্রীকে বলে, “পারলে তুই তোর ভগ্নিপতির টাকা ফেরত দে, আমি টাকা দিতে পারবোনা। যদি টাকা দিতে না পারিস তা হলে মরে যা”। স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং মরে যেতে প্ররোচনা দেয়ার পর ওই রাতেই কোন এক সময় ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে সে আত্মহত্যাকরে।
এ দিকে স্ত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা টের পেয়ে রেজাউল বাড়ী থেকে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা থেকে আটক করে পুলিশে দেয়।
নিহত গৃহবধু চায়নার পিতা সিরাজ দেওয়ান বলেন, ৭বছর আগে রেজাউলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দেই। বিয়ের পর থেকেই সে আমার মেয়েকে নানা ভাবে অত্যাচার করতো। ঠিক মতো রোজগার করতো না। নেশা গ্রহণ সহ নানা বাজে আড্ডায় লিপ্ত থাকতো। নিয়মিত অনেক রাত করে বাড়ী ফিরতো। আমার মেয়ে ও দুই নাতনির ঠিক মতো ভরণ পোষণ দিত না।প্রায়ই আমার বাড়ীতে পাঠিয়ে দিতো। সংসারে ঝগড়া-ঝাটি লেগেই থাকতো। আমি সাধ্যমত চাল-ডাল, টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করতাম। সে আমার মেয়েকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজাবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। থানায় মৃত গৃহবধুর ভাই জাহাঙ্গীর দেওয়ান বাদী হয়ে পেনাল কোডে ৩০৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে রাজবাড়ীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।