সংবাদ শিরোনাম ::
জলবায়ু অর্থায়ন হতে হবে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চরফ্যাশন সরকারি কলেজের নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে মোহাম্মদ উল্যাহ স্বপনের নিয়োগ নোয়াখালীতে খাল দখল নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে নিহত গোয়ালন্দের শফিক সহ বিএনপিপন্থী ৬৬ আইনজীবীকে মামলা থেকে অব্যাহতি ভোমরায় দেড় কোটি টাকার সোনার চকলেটসহ কিশোর আটক পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরতে নেমে জালে মিলল ১৪ কেজির পাঙ্গাশ মোংলা দিগরাজ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় কলেজের নবীন বরণ মিয়ানমার সীমান্তে ফের বিস্ফোরণ, সীমান্তবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ব্যাংক ম্যানেজারকে মারধর করে ভল্টের চাবি ছিনতাই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের; সাজ্জাদ জহির চন্দন
সংবাদ শিরোনাম ::
জলবায়ু অর্থায়ন হতে হবে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চরফ্যাশন সরকারি কলেজের নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে মোহাম্মদ উল্যাহ স্বপনের নিয়োগ নোয়াখালীতে খাল দখল নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে নিহত গোয়ালন্দের শফিক সহ বিএনপিপন্থী ৬৬ আইনজীবীকে মামলা থেকে অব্যাহতি ভোমরায় দেড় কোটি টাকার সোনার চকলেটসহ কিশোর আটক পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরতে নেমে জালে মিলল ১৪ কেজির পাঙ্গাশ মোংলা দিগরাজ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় কলেজের নবীন বরণ মিয়ানমার সীমান্তে ফের বিস্ফোরণ, সীমান্তবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ব্যাংক ম্যানেজারকে মারধর করে ভল্টের চাবি ছিনতাই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের; সাজ্জাদ জহির চন্দন

আমরা যেভাবে ইসলাম পেলাম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২৫৮ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশে ইসলাম কখন এসেছে? বেশ কয়েকজনকে এ প্রশ্নটি করলাম। প্রায় সবাই উত্তর দিল, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির হাত ধরে। যার অর্থ দাঁড়ায় ১২০৩ খ্রিষ্টাব্দে।

এ উত্তরকে ভুল বলা যায় না আবার সঠিকও না। প্রশ্নটা যদি হতো, বাংলাদেশীয় অঞ্চলে মুসলমানদের শাসন কবে প্রতিষ্ঠিত হয়? তখন উত্তর এটা হতে পারত। কুতুবউদ্দিন আইবেকের সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির হাতে পূর্ব ভারত তথা বাংলাদেশে মুসলমানদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে ইসলাম এ দেশে আরও বহু আগেই এসেছিল।

হজরত উমর (রা.)-এর শাসনামলে বাহরাইন ও ওমানের শাসক প্রখ্যাত সাহাবি হজরত উসমান বিন আবুল আস সাকাফী তার দুই ভাই আল হাকাম ও মুগিরাকে ভারতবর্ষে প্রেরণ করেছিলেন। তারাই প্রথম ভারত উপমহাদেশে ইসলামের পতাকা উড্ডীন করেন। এ কাফেলায় আরও বেশ কয়েকজন সাহাবি ছিলেন।

হজরত আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল্লাহ ওতবান, আশইয়াম বিন আমর তামিমী, সোহার বিন আল আবদী, সুহাইল বিন আদী, আব্দুর রহমান বিন সামুরাহ রাজি তাদের অন্যতম। হজরত উসমানের যুগে উবায়দুল্লাহ বিন তামিমি, হজরত আলী রাজি-এর যুগে হারিস বিন মুররাহ আবদী ভারত বর্ষে এসেছিলেন।

এ অভিযানগুলোর সবকটিই হয়েছিল ভারতবর্ষের সিন্ধু, দেবল ও সিজিস্তান অঞ্চলে। বাংলাদেশীয় অঞ্চলে ইসলাম এসেছে মূলত আরব বণিকদের হাত ধরে।

আয়তনে প্রায় ইউরোপ মহাদেশের সমান এ উপমহাদেশের প্রতি আরবদের আগ্রহ ছিল আগ থেকেই। বিভিন্ন ধরনের মসলা, উৎকৃষ্টমানের বস্ত্র, সুগন্ধি ও কাঁচামালের জন্য তারা এ দেশে আনাগোনা করত অহরহ। সম্ভবত বাণিজ্যের এ পথ ধরেই প্রথম মুসলিম ধর্ম প্রচারক ও সুফি সাধকরা এ দেশের মাটিতে পদার্পণ করেন।

এসব ইসলাম প্রচারক, খোদাভীরু ওলি আউলিয়াদের সুমহান চরিত্রে মুগ্ধ হয়ে এ দেশের মানুষ ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে। এবং ইসলামের সুশীতল ছায়ায় দীক্ষিত হতে থাকে। উপমহাদেশের দক্ষিণাঞ্চল অর্থাৎ সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে তাদের আগমন ঘটেছিল সবচেয়ে বেশি।

যার ফলে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, ঢাকার উপকূলীয় অঞ্চল এবং রংপুরে সেসব নওমুসলিমদের বসতি উঠেছিল ব্যাপকভাবে। মুসলিম ভৌগোলিক ও পর্যটকদের লেখা থেকে জানা যায়, খ্রিষ্ট্রীয় অষ্টম শতকের দিকে চট্টগ্রাম বন্দর ও মেঘনার পূর্ববর্তী এলাকা আরব উপনিবেশে পরিণত হয়।

রংপুরে হিজরি ২০০ সালের দিকে মুসলিম সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে। রাজশাহীতে ৭৮৬-৮০৯ খ্রিষ্টাব্দের একটি মুসলিম আমলের মুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে। কুমিল্লা জেলার ময়নামতিতে খননকালে আব্বাসি যুগের আরও দুটি স্বর্ণমুদ্রা পাওয়া যায়। লালমনিটরহাটে অবস্থিত ‘সাহাবা মসজিদ’ও মুসলিম সভ্যতার সাক্ষ্য বহন করে দাঁড়িয়ে আছে সগৌরবে।

মসজিদটি ৬৯০ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ৬৯ হিজরিতে নির্মিত হয়। লোকমুখে প্রচলিত আছে, এক দল সাহাবি হজরত আবু ওয়াক্কাস মালিক বিন ওয়াহাব (রা.)-এর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে চীনে আগমন করেন তখন আবু ওয়াক্কাস (রা.) মসজিদটি নির্মাণ করেন।

তা ছাড়া বহু প্রাচীন আউলিয়া কেরামের খানকাহ ও মাজার জানান দিচ্ছে যে এ দেশে ইসলাম বহু আগেই এসেছে। অবশ্য এর আগে পুরো উপমহাদেশে আর্য হিন্দুদের বসতি ছিল।

ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি বাংলাদেশীয় অঞ্চল জয় করেছিলেন ঠিক। কিন্তু মানব কল্যাণে উৎসর্গিত প্রাণ সুফি সাধকরা এ দেশের মানুষের মন বহু আগেই জয় করে ফেলেছিলেন। এ জন্যই ইসলাম এখনো এ দেশে মাথা উঁচু করে আছে। ক্ষমতার পালাবদলে হারিয়ে যায়নি।

আমরা গর্বভরে নিজেদের মুসলমান পরিচয় দিতে পারি। সেসব ওলি আউলিয়ারা স্বদেশ, পরিজন ছেড়ে এ দেশে না এলে আমরা কখনোই ইসলাম পেতাম না। এ রকম দুনিয়া ত্যাগী কয়েকজন আউলিয়ার নাম উল্লেখ করতে হয়।

যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, হজরত শাহজালাল (র.)। ৭০৩ হিজরি মোতাবেক ১৩০৩ খ্রিষ্টীয় সালে ৩২ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে অধুনা বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এসেছিলেন। সুদূর ইয়েমেনে পরিবার ছেড়ে আসার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ধর্ম প্রচার। মানবজাতিকে সঠিক পথের দিশা দেওয়া। তার সঙ্গে আরও ৩৬০ জন আউলিয়া এসেছিলেন। যাদের প্রত্যেকেই পরিবারের তুলনায় ধর্মকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন।

হজরত শাহ পরান (র.)-এর কথাও বলতে হবে। মামার যোগ্য সহযোগী হিসাবে তিনিও ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়ে সিলেটে এসেছিলেন। এর পরই যার নাম আসবে তিনি হলেন সুলতানুল আরেফিন বায়েজিদ বোস্তামী (র.)। ২৬১ হিজরিতে সুদূর ইরান থেকে তিনি চট্টগ্রামে আসেন। এবং ধর্ম প্রচারে আÍনিয়োগ করেন। নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহে শাহ সুলতান রুমি (র.) আসেন ৪৪৫ হিজরিতে।

বাবা আদম শহীদ (র.) ৪৯২ হিজরিতে বিক্রমপুর, ঢাকা ও পাবনায় ইসলাম প্রচার করেন। শেখ ফরিদ উদ্দিন গঞ্জেশকর (র.) ফরিদপুরে ধর্মের দাওয়াত দেন। শাহ মখদুম রুপোশ (র.) ৬১৫ হিজরিতে রাজশাহীতে আসেন। তিনি ছিলেন রাজশাহী অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ ইসলাম প্রচারক। শেখ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা ৬৭৭ হিজরিতে নারায়ণগঞ্জে এসে এ দেশে প্রথম হাদিসের দরস দেন।

এসব ওলি আউলিয়াদের অধিকাংশ আরব, ইয়েমেন, ইরাক, ইরান, খোরাসান, মধ্য এশিয়া থেকে এসেছিলেন। কিন্তু তারা আর নিজেদের দেশে ফিরে যাননি। ধর্ম প্রচার করতে করতে এ দেশেই চিরতরে শায়িত হয়েছেন। যাদের ত্যাগ তিতিক্ষার ফলে আমরা ইসলাম পেলাম আল্লাহ তাদের চির সুখের জান্নাতে মহান সম্মানিত আসনে সমাসীন করুন। আমিন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

আমরা যেভাবে ইসলাম পেলাম

আপডেট সময় : ১২:১৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

বাংলাদেশে ইসলাম কখন এসেছে? বেশ কয়েকজনকে এ প্রশ্নটি করলাম। প্রায় সবাই উত্তর দিল, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির হাত ধরে। যার অর্থ দাঁড়ায় ১২০৩ খ্রিষ্টাব্দে।

এ উত্তরকে ভুল বলা যায় না আবার সঠিকও না। প্রশ্নটা যদি হতো, বাংলাদেশীয় অঞ্চলে মুসলমানদের শাসন কবে প্রতিষ্ঠিত হয়? তখন উত্তর এটা হতে পারত। কুতুবউদ্দিন আইবেকের সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির হাতে পূর্ব ভারত তথা বাংলাদেশে মুসলমানদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে ইসলাম এ দেশে আরও বহু আগেই এসেছিল।

হজরত উমর (রা.)-এর শাসনামলে বাহরাইন ও ওমানের শাসক প্রখ্যাত সাহাবি হজরত উসমান বিন আবুল আস সাকাফী তার দুই ভাই আল হাকাম ও মুগিরাকে ভারতবর্ষে প্রেরণ করেছিলেন। তারাই প্রথম ভারত উপমহাদেশে ইসলামের পতাকা উড্ডীন করেন। এ কাফেলায় আরও বেশ কয়েকজন সাহাবি ছিলেন।

হজরত আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল্লাহ ওতবান, আশইয়াম বিন আমর তামিমী, সোহার বিন আল আবদী, সুহাইল বিন আদী, আব্দুর রহমান বিন সামুরাহ রাজি তাদের অন্যতম। হজরত উসমানের যুগে উবায়দুল্লাহ বিন তামিমি, হজরত আলী রাজি-এর যুগে হারিস বিন মুররাহ আবদী ভারত বর্ষে এসেছিলেন।

এ অভিযানগুলোর সবকটিই হয়েছিল ভারতবর্ষের সিন্ধু, দেবল ও সিজিস্তান অঞ্চলে। বাংলাদেশীয় অঞ্চলে ইসলাম এসেছে মূলত আরব বণিকদের হাত ধরে।

আয়তনে প্রায় ইউরোপ মহাদেশের সমান এ উপমহাদেশের প্রতি আরবদের আগ্রহ ছিল আগ থেকেই। বিভিন্ন ধরনের মসলা, উৎকৃষ্টমানের বস্ত্র, সুগন্ধি ও কাঁচামালের জন্য তারা এ দেশে আনাগোনা করত অহরহ। সম্ভবত বাণিজ্যের এ পথ ধরেই প্রথম মুসলিম ধর্ম প্রচারক ও সুফি সাধকরা এ দেশের মাটিতে পদার্পণ করেন।

এসব ইসলাম প্রচারক, খোদাভীরু ওলি আউলিয়াদের সুমহান চরিত্রে মুগ্ধ হয়ে এ দেশের মানুষ ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে। এবং ইসলামের সুশীতল ছায়ায় দীক্ষিত হতে থাকে। উপমহাদেশের দক্ষিণাঞ্চল অর্থাৎ সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে তাদের আগমন ঘটেছিল সবচেয়ে বেশি।

যার ফলে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, ঢাকার উপকূলীয় অঞ্চল এবং রংপুরে সেসব নওমুসলিমদের বসতি উঠেছিল ব্যাপকভাবে। মুসলিম ভৌগোলিক ও পর্যটকদের লেখা থেকে জানা যায়, খ্রিষ্ট্রীয় অষ্টম শতকের দিকে চট্টগ্রাম বন্দর ও মেঘনার পূর্ববর্তী এলাকা আরব উপনিবেশে পরিণত হয়।

রংপুরে হিজরি ২০০ সালের দিকে মুসলিম সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে। রাজশাহীতে ৭৮৬-৮০৯ খ্রিষ্টাব্দের একটি মুসলিম আমলের মুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে। কুমিল্লা জেলার ময়নামতিতে খননকালে আব্বাসি যুগের আরও দুটি স্বর্ণমুদ্রা পাওয়া যায়। লালমনিটরহাটে অবস্থিত ‘সাহাবা মসজিদ’ও মুসলিম সভ্যতার সাক্ষ্য বহন করে দাঁড়িয়ে আছে সগৌরবে।

মসজিদটি ৬৯০ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ৬৯ হিজরিতে নির্মিত হয়। লোকমুখে প্রচলিত আছে, এক দল সাহাবি হজরত আবু ওয়াক্কাস মালিক বিন ওয়াহাব (রা.)-এর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে চীনে আগমন করেন তখন আবু ওয়াক্কাস (রা.) মসজিদটি নির্মাণ করেন।

তা ছাড়া বহু প্রাচীন আউলিয়া কেরামের খানকাহ ও মাজার জানান দিচ্ছে যে এ দেশে ইসলাম বহু আগেই এসেছে। অবশ্য এর আগে পুরো উপমহাদেশে আর্য হিন্দুদের বসতি ছিল।

ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি বাংলাদেশীয় অঞ্চল জয় করেছিলেন ঠিক। কিন্তু মানব কল্যাণে উৎসর্গিত প্রাণ সুফি সাধকরা এ দেশের মানুষের মন বহু আগেই জয় করে ফেলেছিলেন। এ জন্যই ইসলাম এখনো এ দেশে মাথা উঁচু করে আছে। ক্ষমতার পালাবদলে হারিয়ে যায়নি।

আমরা গর্বভরে নিজেদের মুসলমান পরিচয় দিতে পারি। সেসব ওলি আউলিয়ারা স্বদেশ, পরিজন ছেড়ে এ দেশে না এলে আমরা কখনোই ইসলাম পেতাম না। এ রকম দুনিয়া ত্যাগী কয়েকজন আউলিয়ার নাম উল্লেখ করতে হয়।

যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, হজরত শাহজালাল (র.)। ৭০৩ হিজরি মোতাবেক ১৩০৩ খ্রিষ্টীয় সালে ৩২ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে অধুনা বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এসেছিলেন। সুদূর ইয়েমেনে পরিবার ছেড়ে আসার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ধর্ম প্রচার। মানবজাতিকে সঠিক পথের দিশা দেওয়া। তার সঙ্গে আরও ৩৬০ জন আউলিয়া এসেছিলেন। যাদের প্রত্যেকেই পরিবারের তুলনায় ধর্মকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন।

হজরত শাহ পরান (র.)-এর কথাও বলতে হবে। মামার যোগ্য সহযোগী হিসাবে তিনিও ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়ে সিলেটে এসেছিলেন। এর পরই যার নাম আসবে তিনি হলেন সুলতানুল আরেফিন বায়েজিদ বোস্তামী (র.)। ২৬১ হিজরিতে সুদূর ইরান থেকে তিনি চট্টগ্রামে আসেন। এবং ধর্ম প্রচারে আÍনিয়োগ করেন। নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহে শাহ সুলতান রুমি (র.) আসেন ৪৪৫ হিজরিতে।

বাবা আদম শহীদ (র.) ৪৯২ হিজরিতে বিক্রমপুর, ঢাকা ও পাবনায় ইসলাম প্রচার করেন। শেখ ফরিদ উদ্দিন গঞ্জেশকর (র.) ফরিদপুরে ধর্মের দাওয়াত দেন। শাহ মখদুম রুপোশ (র.) ৬১৫ হিজরিতে রাজশাহীতে আসেন। তিনি ছিলেন রাজশাহী অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ ইসলাম প্রচারক। শেখ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা ৬৭৭ হিজরিতে নারায়ণগঞ্জে এসে এ দেশে প্রথম হাদিসের দরস দেন।

এসব ওলি আউলিয়াদের অধিকাংশ আরব, ইয়েমেন, ইরাক, ইরান, খোরাসান, মধ্য এশিয়া থেকে এসেছিলেন। কিন্তু তারা আর নিজেদের দেশে ফিরে যাননি। ধর্ম প্রচার করতে করতে এ দেশেই চিরতরে শায়িত হয়েছেন। যাদের ত্যাগ তিতিক্ষার ফলে আমরা ইসলাম পেলাম আল্লাহ তাদের চির সুখের জান্নাতে মহান সম্মানিত আসনে সমাসীন করুন। আমিন