মোংলায় কবি রুদ্র’র জন্মবার্ষিকীতে পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ
- আপডেট সময় : ০৬:৩৮:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ৭০ বার পড়া হয়েছে
কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো জনপ্রিয় এ গানের মধ্যদিয়ে এখনও যেন বেঁচে রয়েছেন দেশের মানুষের মাঝে। শুধু গানই নয়, কবিতার মধ্যদিয়েও তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন দেশের মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি, সমাজের শাসকগোষ্ঠী নিপীড়ন ও সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দ্দশার চিত্রও। এসব কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতিও পেয়েছিলেন অকাল প্রয়াত কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
৬৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মোংলার মিঠাখালীতে কবির নিজ গ্রামের বাড়ীতে কবির নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুল চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় নানা অনুষ্ঠান।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে রুদ্রের জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদের উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি মাহমুদ হাসান ছোট মনি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমাদের গ্রাম’র পরিচালক রেজা সেলিম, এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহিম ও মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ।
রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও রুদ্রের অনুজ সাংবাদিক সুমেল সারাফাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জন্মবার্ষিকীতে গান, কবিতা, আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ, ফ্রি মেডিকেল সেবা প্রদাণ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে বের হয় জন্মবার্ষিকীর শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা শেষে কবির কবরে ফুল দেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালের রেডক্রস হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাংলাদেশের কবিতায় অবিসস্মরণীয় এই কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
অকাল প্রয়াত এই কবি তার কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’- এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততোধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন- ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাঁকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা। দেশ ও জাতির সংকটে রুদ্রের কবিতা হয়ে উঠেছে তারুণ্যের হাতিয়ার।
মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন।‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেন।#