অফিসের ফোনে বাসা থেকে বের হয়েই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ যায় আব্দুল গণির
জেলা প্রতিনিধি, রাজবাড়ী
- আপডেট সময় :
০৩:৩৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
১৪
বার পড়া হয়েছে
{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"transform":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ
(Google News) ফিডটি
সাপ্তাহিক ছুটি থাকা সত্ত্বেও শুক্রবার (১৯ জুলাই) অফিসের ফোন পেয়ে সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ডার গুপিপাড়ার বাসা থেকে গুলশান-২ সিক্সসিজন নামক আবাসিক হোটেলের উদ্দেশ্যে বের হন আব্দুল গণি (৪৫)। পথিমধ্যে শাহজাদপুর বাঁশতলা এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে তার মাথার ডান পাশে গুলি লেগে আরেক পাশ দিয়ে বের হয়। স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেলে সে মারা যায়।
আব্দুল গণি রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার আব্দুল মজিদ শেখের ছেলে। সে গুলশান সিক্সসিজন নামক আবাসিক হোটেলে কারিগরি বিভাগে কাজ করতেন। তিন দিন পর রোববার (২১ জুলাই) বিকেলে তার লাশ গ্রামের বাড়ি খানখানাপুর আনা হয়। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। আব্দুল গণির স্ত্রী লাকি আক্তার, ছেলে এইচএসসি পরিক্ষার্থী আলামিন শেখ ও ৬ বছর বয়সী মেয়ে জান্নাত রয়েছে।
দেখা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন খানখানাপুর মোস্তফার ইটভাটার ভিতর দিয়ে আব্দুল গণির বাড়ির যাতায়াতের রাস্তা। সেখানেই নবনির্মিত ইটের গাঁথুনির একতলা বাড়ি। এখনো ঘরের প্লাস্টারের কাজ শেষ হয়নি। বসানো হয়নি ঘরের জানালা। একটি কক্ষ ঠিক করে সেখানেই উঠেছেন পরিবার। ওই কক্ষের খাটে বিমর্ষ অবস্থায় পড়ে আছেন স্ত্রী লাকি আক্তার। পাশে ছোট মেয়ে জান্নাত। স্বজনরা মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দিচ্ছেন।
আহাজারি করতে করতে লাকি আক্তার বলেন, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ফোন করে জানায়, “বাড়ির সবাই নাস্তা করেছি কি না। জরুরি ফোন পেয়ে অফিসে যাচ্ছি। ঢাকার পরিস্থিতি ভালোনা। আমার জন্য দোয়া করো। জান্নাতকে দেখে রেখ বলেই ফোন রেখে দেন”। বেলা ১১টার দিকে ঢাকা থেকে এক আত্মীয় ফোনে জানায়, গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন। আমার স্বামী তো রাজনীতি করেন না। তাহলে কেন তাকে মারা হলো। তার লাশ হাসপাতালে পড়ে আছে। আমার দুই ছেলে মেয়েরে কে দেখবে? এভাবেই বিলাপ করতে থাকেন।
ছেলে আলামিন শেখ বলেন, দুর্ঘটনার দুইদিন আগে বাবার কাছে যাই। রাতে এক আত্মীয়ের বাসায় ছিলাম। সকালে বাড়ি থেকে মা ফোনে বাবার গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা জানায়। পরে সবাই হাসপাতালে ছুটে যাই। দুইদিন বাবার লাশ বাইরে ছিল। বাবা তো আন্দোলনে ছিলেন না। তাহলে কেন তাকে গুলি করে মারা হলো।
আব্দুল গণির বড় ভাই আব্দুল রাজ্জাক শেখ বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঢাকায় যাই। হাসপাতালের বাইরে লাশ পড়েছিল। দুইদিন লাশ বাইরে থাকায় ফুলে যাচ্ছিল। তখনো ফ্রিজিং করে রাখার অনুমোতি দেয়নি। থানায় অনেক ঘোরার পর অনুমোতি মিললে ঢাকা মেডিকেলের ফ্রিজিংয়ে রাখতে পারি। পরদিন দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে বেলা আড়াইটার দিকে লাশ বুঝিয়ে দিলে বিকেলে গ্রামে ফিরে রাতেই দাফন করা হয়।
আব্দুর রাজ্জাক শেখ বলেন, লাশ নিয়েও রাজনীতি হয়েছে। অথচ আমার ভাই কোন রাজনীতি করেনা। ওর দুটি সন্তান এতিম হয়েছে। পরিবার চলার মতো আয়ের কোন পথ নাই। নতুন বাড়ি করতে গিয়ে অনেক টাকা দেনা হয়েছে।
নিউজটি শেয়ার করুন