প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আসলেন না নৌ-মন্ত্রী, সিটি মেয়র ও বন-উপমন্ত্রী, প্রধান অতিথির আসনে নৌ-সচিব
- আপডেট সময় : ০৬:৩৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ডিসেম্বর ২০২১ ২৩৩ বার পড়া হয়েছে
১ ডিসেম্বর মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৭১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর এবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও জরুরী প্রয়োজনে আসলেনা তিনি। প্রতিবছর প্রতিষ্ঠা বাষিকীতে মোংলা-রামপালের সাবেক এমপি ও বর্তমান খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এবং পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার উপস্থিত থেকে মোংলা বন্দরের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিয়ে নানা দিক নির্দেশনা মুলক পরামর্শ ও আলাচনায় অংশ গ্রহন করেন। কিন্ত এবছর তাদেরকেও দেখা যায়নী এবারের প্রতিষ্ঠা বাষিকী ও বড় খানায় অংশ নিতে। শুধু পুর্বের প্রধান অতিথি বা বিশেষ অতিথি নয় দেখা যায়নী কোন দলীয় নেতাকর্মীদেরও। সাদামাটা ভাবে এবছরের মোংলা বন্দরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করা হয়েছে বলে উপস্থিত অনেকেই এ নিয়ে নানা গুঞ্জন উঠেছে।
এবারের অনুষ্ঠানে এ অঞ্চলের দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত না হলেও নানা উৎসব উদ্দিপনা ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে মোংলা বন্দরের ৭১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর পালন করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ উপলক্ষে বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দ্যেগে শোভা যাত্রা বের হয় বন্দর এলাকায়। এ সময় শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠা বাষির্কীর উদ্বোধন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মাদ মুসা। পরে বন্দর ভবন চত্বরে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মাদ মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব মোহাম্মাদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীরসহ অন্যান্য অতিথিরা থাকার কথা থাকলেও তারা ছিলেন এ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত। তবে বন্দর ছাড়াও বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও সরকারে উচ্চ পদস্থ্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বন্দরের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ও সম্ভাবনার নানা বিষয় উঠে আসা আমন্ত্রিত অতিথি, শিপ ও বার্থ অপারেটর এ্যাসোসিয়েমন’র সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন, সাইফ পোর্ট এর চেয়ারম্যান তরফদার রুহুল আমিন, ইনারবার ড্রেজিংয়ের কনসালটেন্ট আইনুল কামাল, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মচারী সংঘ (সিবিএ)’র সাধারন সম্পাদক কাজী খোরশেদ আলম পল্টু ও বন্দর অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশনের সহ-সাধারন সম্পাদক মোঃ কুদরত আলী সহ বন্দর ব্যবহারকারীদের অনেকেই বক্তব্য রাখেন। এছাড়া, কমান্ডার ফ্লোটিলা ওয়েষ্ট কমোডোর আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, ব্যাবস্থাপনা পরিচালনক খুলনা শিপইয়ার্ড লিঃ কমোডোর খন্দকার আক্তার হোসেন, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমোডোর এম আব্দুল ওয়াদুদ তরফদার, সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) মোঃ ইমতিযাজ হোসেন (যুগ্ন-সচিব), সদস্য (আর্থ) সৈয়দ রবিউল আলম (যুগ্ন-সচিব), পরিচালক প্রশাসন, বিভাগীয় প্রধানগন ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বন্দর চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে বলেন, চলতি অর্থ বছরে বিভিন্ন পন্য বোঝাই দেশী-বিদেশী জাহাজ আগামনের ৭০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বারছে জাহাজ, আগের তুলনায় বাড়ছে রাজস্ব। গত ৫ মাসে পন্য বোঝাই ৩৮৮টি বানিজ্যিক জাহাজ মোংলা বন্দরে পন্য খালাস করেছে, সাড়ে ৮ হাজার গাড়ী ও ৪৯ লক্ষ কার্গো হ্যান্ডেলিং করা হয়েছে। এছাড়া সরকারের মেঘা প্রকল্প, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রুপপুর পারমানবিক কেন্দ্রে ও মেট্ট্রোরেল সরঞ্জামাদী বোঝাই করা জাহাজ এ বন্দর দিয়ে খালাস হয়েছে। বানিজ্যিক জাহাজ ও সরকারের উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে গত বছরের রেকর্ড অতিক্রম করতে সক্ষম হবো আমরা। এছাড়া উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ও সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক নিয়ে নানা বিষয় সকলের সামনে বক্তব্য রাখে বন্দর চেয়ারম্যা মোহাম্মাদ মুসা।
এ অনুষ্ঠানে বন্দর ব্যবহারকারী ও সর্বচ্চো পণ্য আমাদানী-রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান, শিপিং এজেন্ট, ইষ্টিভিডরস এসোসিয়েশন ও বন্দরের সাথে সংশ্লিষ্টদের সম্মামনা ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। এ ছাড়া বন্দর উন্নয়নে গুরুত্ব পূর্ন অবদান রাখায় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানকেও সম্মামনা স্মারক প্রদান করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব মোহাম্মাদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, একটি বন্দর সঠিক ভাবে সচর রাখতে হলে প্রথমেই দরকার চ্যানেল সচল রাখা। তাই ৯০ দশকের মৃত বন্দর বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় এখন কর্মজজ্ঞে পরিনত হয়েছে। বিশ্বের বানিজ্যিক বাজারে মোংলা বন্দর এখন বানিজ্যিক বন্দরে সুনাম অর্ঝন করেছে। এখানে চ্যানেলে দুইটি ড্রেজিং প্রায় সম্পুর্ন হয়েছে। এছাড়া মোংলা বন্দরকে আরো গতিশিল ও প্রানোবন্ধ করতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানায় এ বন্দর সচিব।
১৯৫০ সালের এ দিনে পশুর নদীর জয়মনির ঘোলে “দি সিটি অব লিয়নস” নামক প্রথম ব্রিটিশ পতাকাবাহী বানিজ্যিক জাহাজ নোঙ্গরের মাধ্যমে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। সে সময় চালনা এ্যাংকারেজ পোর্ট নামে মোংলা সমুদ্র বন্দরের যাত্রা শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় নানা সমস্যা মোকাবেলা করে পণ্য আমাদানী রফতানি ও রাজস্ব আয়ের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে আসছে মোংলা সমুদ্র বন্দর।
বক্তরা তাদের বক্তব্যে বলেন, এ বন্দরকে সম্পুর্নভাবে সক্ষমতা অর্জন করতে হলে সবার আগে চ্যানেল ড্রেজিং সচাল রাখতে হবে। আউটারবার ড্রেজিং হওয়ার পরেও সাড়ে ৯ মিটারে জাহাজ বন্দরে প্রবেশ করতে পারছেনা, মেন্টেনেন্স ড্রেজিং অব্যাহত রাখতে হবে বন্দর চাবাতে হলে।