১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বালিয়াকান্দিতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ

বালিয়াকান্দিতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ

আদালতের মামলা আপোষ-মিমাংসায় ব্যর্থ হয়ে বাড়ী ফেরার পথে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টা ও শ্বাশুড়ীকে মারধোরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত জননী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারের মালিক মো. আরিফুজ্জামান খসরুর বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে গত ১০ জানুয়ারী রাজবাড়ী সদর থানায় ৪জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে নির্যাতিতা গৃহবধুর মা রিনা বেগম।
অভিযোগকারী রিনা বেগম বলেন, একই উপজেলায় বাড়ী হওয়ার সুবাদে কন্যা সাদিয়া আক্তার রুনার (২১) ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী বিয়ে হয় বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের ভীমনগর গ্রামের মৃত মোতালেব খানের ছেলে বালিয়াকান্দি হাসপাতালের সামনে অবস্থিত জননী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারের মালিক মো. আরিফুজ্জামান খসরুর (৪২) সাথে। বিয়ের পর থেকেই খসরু প্রায়ই যৌতুকের দাবীতে রুনাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। তাতে কাজ না হওয়ায় রুনাকে বিষপান করিয়ে হত্যার চেষ্টা করলে আমি তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে মেয়েকে এনে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে রুনার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখান থেকে  চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে আরিফুজ্জামান খসরুর বিরুদ্ধে রুনা বাদী হয়ে রাজবাড়ীর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমণ ট্রাইবুনাল আদালতে মিসপি-১১৫/২১ দায়ের করে। খসরু আপোষের শর্তে জামিনপ্রাপ্ত হয়। এনিয়ে গত ৯জানুয়ারী উভয়পক্ষের আইনজীবি ও অভিভাবকদের নিয়ে রাজবাড়ী জেলা বার এসোসিয়েশনের ১নং বার ভবনে আপোষ নিষ্পত্তির জন্য বসলেও খসরু ও তার পক্ষের লোকজন শালিস না মেনে চলে যায়। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আদালত থেকে বাড়ী ফেরার পথে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাণিবহ ইউনিয়নের সান্ধিয়ারা নয়াপাড়া এলাকায় পৌছা মাত্র বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের ভীমনগর গ্রামের মৃত মোতালেব খানের ছেলে মো. আরিফুজ্জামান খসরু (৪২), তার প্রথম স্ত্রী মাসুমা শারমিন লাভলী (৩৫), স্বপন শিকদার (৫৬), স্বপন শিকদারের ছেলে সাদ্দাম (২৬) মিলে পথরোধ করে। এসময় খসরু তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে রুনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারী বারি মেরে গুরুত্বর জখম করে। আমি রুনাকে বাঁচাতে গেলে লাভলী আমার চুলের মুঠি ধরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল,ঘুষি,লাথি মারে। স্বপন শিকদার দু,হাত দিয়ে রুনার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। সাদ্দাম আমার মুখে চর থাপ্পর মারে। এসময় রুনার ব্যবহৃত মোবাইল সেট, ৮আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন, চারআনা ওজনের স্বর্ণের কানের দুল, ৩ আনা ওজনের স্বর্ণের আংটি ও ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা ৪ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাভলী ছিনিয়ে নেয়। মা-মেয়ের চিৎকারে বাণিবহ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার আজিজুল ইসলামসহ লোকজন এগিয়ে এসে প্রাণে রক্ষা করে। এসময় হামলাকারীরা জীবন নাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে আহত কন্যাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে ১০ জানুয়ারী রাজবাড়ী সদর থানায় ৪জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এসময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাদিয়া তাদের বিচার দাবী করেন।
এ বিষয়ে আরিফুজ্জামান খসরু মুঠোফোনে বলেন, ঘটনাটি মিথ্যা ও আমি এঘটনার সাথে কোন প্রকার জড়িত নয়।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মো. শাহাদত হোসেন বলেন, আমি ছুটিতে আছি, জেনে জানাবো।  তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

বালিয়াকান্দিতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ

Update Time : ০৪:৫৬:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২২
আদালতের মামলা আপোষ-মিমাংসায় ব্যর্থ হয়ে বাড়ী ফেরার পথে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টা ও শ্বাশুড়ীকে মারধোরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত জননী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারের মালিক মো. আরিফুজ্জামান খসরুর বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে গত ১০ জানুয়ারী রাজবাড়ী সদর থানায় ৪জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে নির্যাতিতা গৃহবধুর মা রিনা বেগম।
অভিযোগকারী রিনা বেগম বলেন, একই উপজেলায় বাড়ী হওয়ার সুবাদে কন্যা সাদিয়া আক্তার রুনার (২১) ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী বিয়ে হয় বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের ভীমনগর গ্রামের মৃত মোতালেব খানের ছেলে বালিয়াকান্দি হাসপাতালের সামনে অবস্থিত জননী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টারের মালিক মো. আরিফুজ্জামান খসরুর (৪২) সাথে। বিয়ের পর থেকেই খসরু প্রায়ই যৌতুকের দাবীতে রুনাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। তাতে কাজ না হওয়ায় রুনাকে বিষপান করিয়ে হত্যার চেষ্টা করলে আমি তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে মেয়েকে এনে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে রুনার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখান থেকে  চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে আরিফুজ্জামান খসরুর বিরুদ্ধে রুনা বাদী হয়ে রাজবাড়ীর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমণ ট্রাইবুনাল আদালতে মিসপি-১১৫/২১ দায়ের করে। খসরু আপোষের শর্তে জামিনপ্রাপ্ত হয়। এনিয়ে গত ৯জানুয়ারী উভয়পক্ষের আইনজীবি ও অভিভাবকদের নিয়ে রাজবাড়ী জেলা বার এসোসিয়েশনের ১নং বার ভবনে আপোষ নিষ্পত্তির জন্য বসলেও খসরু ও তার পক্ষের লোকজন শালিস না মেনে চলে যায়। ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আদালত থেকে বাড়ী ফেরার পথে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাণিবহ ইউনিয়নের সান্ধিয়ারা নয়াপাড়া এলাকায় পৌছা মাত্র বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের ভীমনগর গ্রামের মৃত মোতালেব খানের ছেলে মো. আরিফুজ্জামান খসরু (৪২), তার প্রথম স্ত্রী মাসুমা শারমিন লাভলী (৩৫), স্বপন শিকদার (৫৬), স্বপন শিকদারের ছেলে সাদ্দাম (২৬) মিলে পথরোধ করে। এসময় খসরু তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে রুনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারী বারি মেরে গুরুত্বর জখম করে। আমি রুনাকে বাঁচাতে গেলে লাভলী আমার চুলের মুঠি ধরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল,ঘুষি,লাথি মারে। স্বপন শিকদার দু,হাত দিয়ে রুনার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। সাদ্দাম আমার মুখে চর থাপ্পর মারে। এসময় রুনার ব্যবহৃত মোবাইল সেট, ৮আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন, চারআনা ওজনের স্বর্ণের কানের দুল, ৩ আনা ওজনের স্বর্ণের আংটি ও ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা ৪ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাভলী ছিনিয়ে নেয়। মা-মেয়ের চিৎকারে বাণিবহ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার আজিজুল ইসলামসহ লোকজন এগিয়ে এসে প্রাণে রক্ষা করে। এসময় হামলাকারীরা জীবন নাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে আহত কন্যাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে ১০ জানুয়ারী রাজবাড়ী সদর থানায় ৪জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এসময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাদিয়া তাদের বিচার দাবী করেন।
এ বিষয়ে আরিফুজ্জামান খসরু মুঠোফোনে বলেন, ঘটনাটি মিথ্যা ও আমি এঘটনার সাথে কোন প্রকার জড়িত নয়।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মো. শাহাদত হোসেন বলেন, আমি ছুটিতে আছি, জেনে জানাবো।  তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।