১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে পদ্মার চর জুরে টমেটোর আবাদ, পচন রোগের কারনে লোকসানের শঙ্কা

রাজবাড়ীতে পদ্মার চর জুরে টমেটোর আবাদ, পচন রোগের কারনে লোকসানের শঙ্কা

পদ্মার বিস্তির্ণ চর জুরে শুধুই টমেটোর ক্ষেত। রাজবাড়ীর সদর আর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মার বিস্তির্ণ চর জুরে বিভিন্ন জাতের টমেটোর আবাদ হয়ে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। বিউটি ফুল, বিপুল প্লাস, বিগল ও মিন্টু সুপার এসব উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর আবাদ হচ্ছে জেলায়। বিঘা প্রতি ফলন হয় দেড়শো থেকে দুইশ মন। তাই কৃষক দীর্ঘদিন ধরে চরের জমিতে টমেটো আবাদ করে আসছে। টমেটো আবাদ লাভ জনক হওয়ায় প্রতি বছর আবাদও বাড়ছে।

জেলার উৎপাদিত টমেটো রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলাতে বিক্রি হয়। তবে এবছর পচন রোগে ক্ষেতের অনেক টমেটো পচে যাচ্ছে। ফলে লোকসানের শঙ্কায় আছেন চাষীরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে পচন রোগ ঠেকাতে নিয়মিত ছক্রাক নাশক ওষুধ দিতে পরামর্শ দিচ্ছে তারা।

সরেজমিন সদর উপজেলার উড়াকান্দা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাঠ জুরে রয়েছে টমেটোর ক্ষেত। এক একটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে কাঁচা-পাকা টমেটো। এবছর টমেটো ক্ষেতে পচন রোগ ধরায় অনেক টমেটো পচে যাচ্ছে। কৃষকেরা ক্ষেত থেকে পচা টমেটো ফেলে গাছ থেকে পাকা টমেটো ছিড়ে ঝুঁড়িতে রাখছে। পুরুষের পাশাপাশি বাড়ির নারীরাও টমোটো তোলার কাজ করছে। এরপর সেই টমোটোর ঝুঁড়ি মাথায় নিয়ে মাঠ থেকে অধা কিলোমিটার দূরে বস্তায় ভরছে। সেখান থেকে ভ্যানে করে বাজারে বিক্রি করছে।

ওই এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান জানায়,তিনি এবছর চার বিঘা জমিতে টমেটোর আবাদ করেছে। এক বিঘা জমিতে টমোটোর আবাদ করতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমিতে টমেটো একশ থেকে দেড়শ মণ ।

আরেক কৃষক মন্তাজ শেখ জানায়, অসময়ে বৃষ্টির কারনে টমেটো ক্ষেতে এই রোগ দেখা দিয়েছে। ফলে গাছ থেকেই টমেটো পচে যাচ্ছে। রোগ ঠেকাতে ওষুধ স্প্রে করছি তাতেও কাজ হচ্ছে না। রোগের প্রকোপ না কমলে এবার লোকসান গুনতে হবে।

হালিমা খাতুন জানায়, এবছর তার বাবা তিন বিঘা জমিতে টমেটোর আবাদ করেছে। ফলও ভালো হয়েছে। শুরুতে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরেছি। বর্তমানে ৫শত থেকে ৬শত টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। এই দাম থাকলেও লোকসান হবে না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস,এম,শহীদ নূর আকবর জানায়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারনে যে বৃষ্টিপাত হয়েছিল তার জন্য টমেটো ক্ষেতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগ থেকে টমেটো রক্ষা করার জন্য ছত্রাক নাশক ওষুধ স্প্রে করতে পরামর্শ দিয়েছেন তারা। আর জেলায় এবছর ৭৯৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

রাজবাড়ীতে পদ্মার চর জুরে টমেটোর আবাদ, পচন রোগের কারনে লোকসানের শঙ্কা

Update Time : ০৫:৩৪:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২২

পদ্মার বিস্তির্ণ চর জুরে শুধুই টমেটোর ক্ষেত। রাজবাড়ীর সদর আর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মার বিস্তির্ণ চর জুরে বিভিন্ন জাতের টমেটোর আবাদ হয়ে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। বিউটি ফুল, বিপুল প্লাস, বিগল ও মিন্টু সুপার এসব উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর আবাদ হচ্ছে জেলায়। বিঘা প্রতি ফলন হয় দেড়শো থেকে দুইশ মন। তাই কৃষক দীর্ঘদিন ধরে চরের জমিতে টমেটো আবাদ করে আসছে। টমেটো আবাদ লাভ জনক হওয়ায় প্রতি বছর আবাদও বাড়ছে।

জেলার উৎপাদিত টমেটো রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলাতে বিক্রি হয়। তবে এবছর পচন রোগে ক্ষেতের অনেক টমেটো পচে যাচ্ছে। ফলে লোকসানের শঙ্কায় আছেন চাষীরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে পচন রোগ ঠেকাতে নিয়মিত ছক্রাক নাশক ওষুধ দিতে পরামর্শ দিচ্ছে তারা।

সরেজমিন সদর উপজেলার উড়াকান্দা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাঠ জুরে রয়েছে টমেটোর ক্ষেত। এক একটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে কাঁচা-পাকা টমেটো। এবছর টমেটো ক্ষেতে পচন রোগ ধরায় অনেক টমেটো পচে যাচ্ছে। কৃষকেরা ক্ষেত থেকে পচা টমেটো ফেলে গাছ থেকে পাকা টমেটো ছিড়ে ঝুঁড়িতে রাখছে। পুরুষের পাশাপাশি বাড়ির নারীরাও টমোটো তোলার কাজ করছে। এরপর সেই টমোটোর ঝুঁড়ি মাথায় নিয়ে মাঠ থেকে অধা কিলোমিটার দূরে বস্তায় ভরছে। সেখান থেকে ভ্যানে করে বাজারে বিক্রি করছে।

ওই এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান জানায়,তিনি এবছর চার বিঘা জমিতে টমেটোর আবাদ করেছে। এক বিঘা জমিতে টমোটোর আবাদ করতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমিতে টমেটো একশ থেকে দেড়শ মণ ।

আরেক কৃষক মন্তাজ শেখ জানায়, অসময়ে বৃষ্টির কারনে টমেটো ক্ষেতে এই রোগ দেখা দিয়েছে। ফলে গাছ থেকেই টমেটো পচে যাচ্ছে। রোগ ঠেকাতে ওষুধ স্প্রে করছি তাতেও কাজ হচ্ছে না। রোগের প্রকোপ না কমলে এবার লোকসান গুনতে হবে।

হালিমা খাতুন জানায়, এবছর তার বাবা তিন বিঘা জমিতে টমেটোর আবাদ করেছে। ফলও ভালো হয়েছে। শুরুতে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরেছি। বর্তমানে ৫শত থেকে ৬শত টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। এই দাম থাকলেও লোকসান হবে না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস,এম,শহীদ নূর আকবর জানায়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারনে যে বৃষ্টিপাত হয়েছিল তার জন্য টমেটো ক্ষেতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগ থেকে টমেটো রক্ষা করার জন্য ছত্রাক নাশক ওষুধ স্প্রে করতে পরামর্শ দিয়েছেন তারা। আর জেলায় এবছর ৭৯৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে।