১১:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভিক্ষুককে মৃত দেখিয়ে বয়স্কভাতা বাতিল!

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:১৬:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১৬৩ Time View

ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক বিধবা বৃদ্ধা ভিক্ষুককে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্কভাতা বাতিল করার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী নগরকান্দা উপজেলার পৌরসভা এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের জগদিয়া বালিয়া গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৮৩)। কয়েক মাস বয়স্কভাতা পাওয়ার পর হঠাৎ তার বয়স্কভাতা বন্ধ হয়ে যায়।

নুরজাহান বেগমের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, জমিজমা না থাকায় বৃদ্ধা গ্রামের পাকা সড়কের পাশে সরকারি জায়গায় ছোট একটি কুঁড়েঘর তৈরি করে বসবাস করছেন। গ্রামে গ্রামে গিয়ে ভিক্ষা করে যা আয় করেন, তা দিয়ে কোনো রকম দুই বেলা ভাত খেতে পারলেও, ভাঙা ঘরে বিনা চিকিৎসায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।

নুরজাহান বেগম বলেন, শুনেছি আমাকে মৃত দেখিয়ে, আমার বয়স্কভাতা বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমিতো এখনো জীবিত। আমার কোনো ছেলে সন্তান নেই, আমার একটি মেয়ে আছে। অনেক আগেই মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেছে। আমি একজন ভূমিহীন বিধবা নারী, আমার কোনো জায়গাজমি নাই। আমি ভিক্ষা করে যা পাই, তা দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। যতদিন বয়স্কভাতার টাকা পেয়েছি, তা দিয়ে আমি ওষুধ কিনে খেতাম। আমার বয়স্কভাতা বন্ধ করে দেওয়ায়, এখন ওষুধ কিনতে পারছি না। যদি সরকারের দেওয়া বয়স্কভাতা পেতাম, তাহলে এত কষ্ট করে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভিক্ষা করতাম না।

বয়স্কভাতা ফেরত চেয়ে তিনি বলেন, অনেকেই সরকারি ঘর পেয়েছে, কিন্তু আমি ঘরও পেলাম না। সরকার যদি আমাকে জায়গাসহ একটি ঘর দিতেন, তাহলে আমি মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতাম।

নগরকান্দা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিকু মিয়া বলেন, আমার এলাকায় নুরজাহান বেগমের মতো আরও অনেকেই আছেন, যারা ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

স্থানীয়দের ধারণা, হয়তো কোনো অসাধু চক্র, গ্রামের অসহায় মানুষদের ভাতা কেটে দিয়ে টাকার বিনিময়ে অন্য কোনো ব্যক্তির নামে ভাতাকার্ড করে দিয়েছে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, নুরজাহান বেগমের নাম বয়স্কভাতা থেকে কর্তন করা হয়েছে। তবে কী কারণে কর্তন করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

ভিক্ষুককে মৃত দেখিয়ে বয়স্কভাতা বাতিল!

Update Time : ১২:১৬:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক বিধবা বৃদ্ধা ভিক্ষুককে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্কভাতা বাতিল করার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী নগরকান্দা উপজেলার পৌরসভা এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের জগদিয়া বালিয়া গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৮৩)। কয়েক মাস বয়স্কভাতা পাওয়ার পর হঠাৎ তার বয়স্কভাতা বন্ধ হয়ে যায়।

নুরজাহান বেগমের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, জমিজমা না থাকায় বৃদ্ধা গ্রামের পাকা সড়কের পাশে সরকারি জায়গায় ছোট একটি কুঁড়েঘর তৈরি করে বসবাস করছেন। গ্রামে গ্রামে গিয়ে ভিক্ষা করে যা আয় করেন, তা দিয়ে কোনো রকম দুই বেলা ভাত খেতে পারলেও, ভাঙা ঘরে বিনা চিকিৎসায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।

নুরজাহান বেগম বলেন, শুনেছি আমাকে মৃত দেখিয়ে, আমার বয়স্কভাতা বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমিতো এখনো জীবিত। আমার কোনো ছেলে সন্তান নেই, আমার একটি মেয়ে আছে। অনেক আগেই মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেছে। আমি একজন ভূমিহীন বিধবা নারী, আমার কোনো জায়গাজমি নাই। আমি ভিক্ষা করে যা পাই, তা দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। যতদিন বয়স্কভাতার টাকা পেয়েছি, তা দিয়ে আমি ওষুধ কিনে খেতাম। আমার বয়স্কভাতা বন্ধ করে দেওয়ায়, এখন ওষুধ কিনতে পারছি না। যদি সরকারের দেওয়া বয়স্কভাতা পেতাম, তাহলে এত কষ্ট করে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ভিক্ষা করতাম না।

বয়স্কভাতা ফেরত চেয়ে তিনি বলেন, অনেকেই সরকারি ঘর পেয়েছে, কিন্তু আমি ঘরও পেলাম না। সরকার যদি আমাকে জায়গাসহ একটি ঘর দিতেন, তাহলে আমি মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতাম।

নগরকান্দা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিকু মিয়া বলেন, আমার এলাকায় নুরজাহান বেগমের মতো আরও অনেকেই আছেন, যারা ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

স্থানীয়দের ধারণা, হয়তো কোনো অসাধু চক্র, গ্রামের অসহায় মানুষদের ভাতা কেটে দিয়ে টাকার বিনিময়ে অন্য কোনো ব্যক্তির নামে ভাতাকার্ড করে দিয়েছে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, নুরজাহান বেগমের নাম বয়স্কভাতা থেকে কর্তন করা হয়েছে। তবে কী কারণে কর্তন করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছি।