১২:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলায় লবন পানির আগ্রসন থেকে পরিবেশ ও জীবন বাঁচাতে মানববন্ধন

মোংলায় লবন পানির আগ্রসন থেকে পরিবেশ ও জীবন বাঁচাতে মানববন্ধন।

মাছ চাষের নামে কৃষি ভুমিতে নদীর লবণ পানি প্রবেশ করানো ফলে অতিরিক্ত লবণাক্ততায় পরিত্যাক্ত পড়ে আছে মোংলা উপজেলার প্রায় হাজার হাজার বিঘা কৃষি উপযোগী জমি। স্থানীয় জমির মালিক ও কৃষকদের অভিযোগ প্রভাবশালী মৎস্য চাষীরা তাদের কৃষি ভুমিতে লবন পানি তোলার কারনে আজ তারা সর্ব শান্ত হয়ে পড়েছেন। তাই ওইসব প্রভাবশালীদের দৌরাত্ব্য বন্ধ করে লবণ থেকে মুক্তি দিতে এবং আবারও কৃষিতে ফিরতে সরকারী সহায়তা চান স্থানীয়রা। এব্যাপারে কৃষি জমিতে ধান চাষের পারে মানববন্ধন সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী জমির মালিক ও কৃষকরা।

মোংলায় লবন পানির আগ্রসন থেকে পরিবেশ ও জীবন বাঁচাতে মানববন্ধন।

প্রত্যাক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী জমির মালিকরা জানায়, মোংলা উপজেলার ফসলি জমির পরিমান ১৮ হাজার ২৪২ হেক্টর। এক সময় এসব জমিতে সকল ধরনের কৃষি ফলাতো কৃষকরা। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের দৌরাত্বে এসব জমির অধিকাংশ ভুমিতে পর্যায় ক্রমে বাগদা চিংড়ি মাছ চাষ শুরু হয় দুই দশক আগে। আর এ মাছ চাষের জন্য দখলদার প্রভাবশালীরা প্রতিনিয়ত কৃষি জমিতে নদীর লবণ পানি প্রবেশ করাতো। কয়েক বছর মাছের ভালো ফলন হলেও এখন মাছ বা কৃষি কোনটিরই ভালো ফলন হচ্ছে না। তাই কয়েক বছর ধরে ধান চাষ না করায় অধিকাংশ কৃষি ভুমি এখন পরিত্যাক্ত পড়ে আছে। ফলে ফলন না হওয়ায় তারা এখন ভুমিহীনদের কাতারে পৌছেছেন।

মোংলায় লবন পানির আগ্রসন থেকে পরিবেশ ও জীবন বাঁচাতে মানববন্ধন।

আবার কৃষিতে ফিরতে শুরু করছেন জমি মালিক ও কৃষকরা। তার পরেও এমন পরিস্থিতিতে থামেনি প্রভাবশালীদের দৌরাত্ব। এখনো তারা নাম মাত্র কৃষি জমি লিজ নিয়ে নদীর লবণ পানি তুলছেন কৃষি জমিতে। ক্ষতি করছেন লিজ ব্যাতিত অন্য কৃষকের জমিও। তাই কৃষি জমিতে লবণ পানি তোলা বন্ধের দাবিতে নানা আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয়রা। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দিয়েছে অভিযোগ, করছে আন্দোলন। একই সাথে সরকারী বিভিন্ন কর্মকর্তা ও জন প্রতিনিধিদের ধারে ধারে ধর্ণা দিচ্ছেন অসহায় এসকল কৃষকরা। তবে সরকারী সহায়তা না পাওয়ায়ও অভিযোগ এ সকল কৃষকদের।

মোংলায় লবন পানির আগ্রসন থেকে পরিবেশ ও জীবন বাঁচাতে মানববন্ধন।

কৃষক দেব গাইন, দেবাস গাইন, বিধান রায়, ছলেমান গাজী, শিখা রানী মিন্ত্রী ও জুয়েল মোল্লা বলেন, লবণাক্ততার ফলে অনাবাদি পড়ে রয়েছে আমাদের হাজার হাজার বিঘা জমি, কিন্ত ধান চাষ করতে পারছিনা কিছু প্রভাশালীদের কারণে। বর্তমানে প্রায় ৫০ একর জমিতে পরিক্ষা মুলক ভাবে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। ফলনও ভাল হবে আশা করছি কিন্ত কিছু প্রভাশালীরা লবন পানি উঠিয়ে ধান নষ্ট করার চেষ্টা করছে। ফলে মরে যাচ্ছে গাছপালা, লবন পানি খেয়ে পেটেরপিড়া সহ মানুষের কঠিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। তাই আমাদের পরিবেশ রক্ষা ও জীবন বাচাতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছে স্থানীয়রা।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, কৃষির উৎপাদন বাড়াতে নানা কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষি বিভাগ। আমাদের কাছে অভিযোগ করেছে চিলা গ্রামের জমির মালিক ও কৃষকরা। তারা প্রধান মন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে আবারও কৃষিতে ফিরতে চান এ সকল কৃষকরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর দাশ বলেন, কৃষি জমির ধান রক্ষায় চিলা গ্রামের বেশ কিছু জমির মালিক ও কৃষক অভিযোগ করেছে। উপজেলা প্রশাসন ওই এলাকার সরে জমিনে জাবেন এবং যাতে লবন পানি না ওঠে সে জন্য সকল ব্যাবস্থা গ্রহন করবে উপজেলা প্রশাসন।

প্রভাবশালীদের লবন পনির মাছ চাষের দৌরাত্ব বন্ধ করতে পারলে, লবণপানি থেকে মিলবে মুক্তি। ফলবে সব ধরনের ফসল। দুর হবে বেকারত্ব, মিঠবে দেশের খাদ্য চাহিদা-এমটাই প্রত্যাশা স্থানীয় কৃষকদের।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

মোংলায় লবন পানির আগ্রসন থেকে পরিবেশ ও জীবন বাঁচাতে মানববন্ধন

Update Time : ০৭:২১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩

মাছ চাষের নামে কৃষি ভুমিতে নদীর লবণ পানি প্রবেশ করানো ফলে অতিরিক্ত লবণাক্ততায় পরিত্যাক্ত পড়ে আছে মোংলা উপজেলার প্রায় হাজার হাজার বিঘা কৃষি উপযোগী জমি। স্থানীয় জমির মালিক ও কৃষকদের অভিযোগ প্রভাবশালী মৎস্য চাষীরা তাদের কৃষি ভুমিতে লবন পানি তোলার কারনে আজ তারা সর্ব শান্ত হয়ে পড়েছেন। তাই ওইসব প্রভাবশালীদের দৌরাত্ব্য বন্ধ করে লবণ থেকে মুক্তি দিতে এবং আবারও কৃষিতে ফিরতে সরকারী সহায়তা চান স্থানীয়রা। এব্যাপারে কৃষি জমিতে ধান চাষের পারে মানববন্ধন সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী জমির মালিক ও কৃষকরা।

মোংলায় লবন পানির আগ্রসন থেকে পরিবেশ ও জীবন বাঁচাতে মানববন্ধন।

প্রত্যাক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী জমির মালিকরা জানায়, মোংলা উপজেলার ফসলি জমির পরিমান ১৮ হাজার ২৪২ হেক্টর। এক সময় এসব জমিতে সকল ধরনের কৃষি ফলাতো কৃষকরা। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের দৌরাত্বে এসব জমির অধিকাংশ ভুমিতে পর্যায় ক্রমে বাগদা চিংড়ি মাছ চাষ শুরু হয় দুই দশক আগে। আর এ মাছ চাষের জন্য দখলদার প্রভাবশালীরা প্রতিনিয়ত কৃষি জমিতে নদীর লবণ পানি প্রবেশ করাতো। কয়েক বছর মাছের ভালো ফলন হলেও এখন মাছ বা কৃষি কোনটিরই ভালো ফলন হচ্ছে না। তাই কয়েক বছর ধরে ধান চাষ না করায় অধিকাংশ কৃষি ভুমি এখন পরিত্যাক্ত পড়ে আছে। ফলে ফলন না হওয়ায় তারা এখন ভুমিহীনদের কাতারে পৌছেছেন।

মোংলায় লবন পানির আগ্রসন থেকে পরিবেশ ও জীবন বাঁচাতে মানববন্ধন।

আবার কৃষিতে ফিরতে শুরু করছেন জমি মালিক ও কৃষকরা। তার পরেও এমন পরিস্থিতিতে থামেনি প্রভাবশালীদের দৌরাত্ব। এখনো তারা নাম মাত্র কৃষি জমি লিজ নিয়ে নদীর লবণ পানি তুলছেন কৃষি জমিতে। ক্ষতি করছেন লিজ ব্যাতিত অন্য কৃষকের জমিও। তাই কৃষি জমিতে লবণ পানি তোলা বন্ধের দাবিতে নানা আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয়রা। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দিয়েছে অভিযোগ, করছে আন্দোলন। একই সাথে সরকারী বিভিন্ন কর্মকর্তা ও জন প্রতিনিধিদের ধারে ধারে ধর্ণা দিচ্ছেন অসহায় এসকল কৃষকরা। তবে সরকারী সহায়তা না পাওয়ায়ও অভিযোগ এ সকল কৃষকদের।

মোংলায় লবন পানির আগ্রসন থেকে পরিবেশ ও জীবন বাঁচাতে মানববন্ধন।

কৃষক দেব গাইন, দেবাস গাইন, বিধান রায়, ছলেমান গাজী, শিখা রানী মিন্ত্রী ও জুয়েল মোল্লা বলেন, লবণাক্ততার ফলে অনাবাদি পড়ে রয়েছে আমাদের হাজার হাজার বিঘা জমি, কিন্ত ধান চাষ করতে পারছিনা কিছু প্রভাশালীদের কারণে। বর্তমানে প্রায় ৫০ একর জমিতে পরিক্ষা মুলক ভাবে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। ফলনও ভাল হবে আশা করছি কিন্ত কিছু প্রভাশালীরা লবন পানি উঠিয়ে ধান নষ্ট করার চেষ্টা করছে। ফলে মরে যাচ্ছে গাছপালা, লবন পানি খেয়ে পেটেরপিড়া সহ মানুষের কঠিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। তাই আমাদের পরিবেশ রক্ষা ও জীবন বাচাতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছে স্থানীয়রা।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, কৃষির উৎপাদন বাড়াতে নানা কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষি বিভাগ। আমাদের কাছে অভিযোগ করেছে চিলা গ্রামের জমির মালিক ও কৃষকরা। তারা প্রধান মন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে আবারও কৃষিতে ফিরতে চান এ সকল কৃষকরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর দাশ বলেন, কৃষি জমির ধান রক্ষায় চিলা গ্রামের বেশ কিছু জমির মালিক ও কৃষক অভিযোগ করেছে। উপজেলা প্রশাসন ওই এলাকার সরে জমিনে জাবেন এবং যাতে লবন পানি না ওঠে সে জন্য সকল ব্যাবস্থা গ্রহন করবে উপজেলা প্রশাসন।

প্রভাবশালীদের লবন পনির মাছ চাষের দৌরাত্ব বন্ধ করতে পারলে, লবণপানি থেকে মিলবে মুক্তি। ফলবে সব ধরনের ফসল। দুর হবে বেকারত্ব, মিঠবে দেশের খাদ্য চাহিদা-এমটাই প্রত্যাশা স্থানীয় কৃষকদের।