কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজবাড়ী জেলা বিএনপি কার্যালয় দখল নিতে বিএনপির দুই পক্ষের সংর্ঘষে অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ও নাসিরুল হক সাবু অনুসারীরা পদযাত্রা উপলক্ষে পার্টি অফিসে ঢুকতে গেলে সালমা হোটের সামনে বাঁধা দেয় জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক হারুন অর রশিদ ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এ্যাডঃ আসলাম মিয়ার অনুসারীরা।
এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। এবং দলীয় ও অনুসারীদের নাম ধরে স্লোগান দিতে থাকে কর্মী-সমর্ধকরা। পরে লাঠি সোঠা নিয়ে সংঘর্ষে জরিয়ে পড়ে দুই গ্রুপ। এতে লাঠি ইটপাটকেলের আঘাতে জেলা বিএনপি নেতা আফসার আলী সরদার, আবুল হোসেন গাজী, সাবেক ছাত্রদল নেতা তুহিনুর রহমান সহ অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় দলীয় কার্যালয়ে থাকা বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল ও দলীয় কার্যালয়ের দরজা-জানালা সহ চেয়ার ভাংচুর করা হয়েছে।
পড়ে হারুন ও আসলাম অনুসারীরা শহরের বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এদিকে পার্টি অফিস এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাডঃ লিয়াকত আলী বলেন, আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ও সাবু যদি মিছিলে সামনে নের্তৃত্ব দিয়ে আসতো, তাহলে তারা স্বাগত জানাতেন। কিন্তু তারা না এসে লাঠিয়াল, ইটপাটকেল ও অস্ত্রধারী বাহিনী পাঠিয়ে তাদের আক্রমন করে। এতে তাদের সিনিয়র নেতা আবুল হোসেন গাজীসহ ৭/৮ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনার সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। একটি স্বার্থনেসী মহল প্রথম থেকেই তিনিসহ হারুন-আসলামকে বাম চোখে দেখা শুরু করেছেন। তাদের আহ্বানে সারা না দিয়ে চর দখল করা মতো পার্টি অফিস দখল করার চেষ্টা করে। বার বার আপোসের প্রস্তাবেও তারা সারা দেন নাই।
সাবেক রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেন, আজকের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসুচি পালনের জন্য হাজার হাজার নেতাকর্মীরা পদযাত্রায় যোগদানে যাবার সময় সরকার দলীয় লোকদের প্ররোচনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসুচি বানচালের জন্যই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আর পার্টি অফিস দখলের তো কোন বিষয় নাই, কারণ তারা দল করেন। এবং পার্টি অফিস যাওয়া সবার অধিকার রয়েছে। মুলত পার্টি অফিসেই তাদের ওপর হামলা হয়েছে।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সালাহউদ্দিন বলেন, তাদের অভ্যন্তরীন কোন্দলে এ ঘটনা ঘটেছে। সংর্ঘষের সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে। এবং এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ তাদের নিয়ন্ত্রণে।
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, পুর্ব ঘোষিত ১০ দফা দাবী বাস্তবায়ন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বগ্রাসী দূর্নীতির প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রা পালন উপলক্ষে সকাল থেকেই রাজবাড়ী জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেয় লিয়াকত-হারুন-আসলাম গ্রুপ। অপরদিকে খৈয়ম-সাবু গ্রুপের কিছু নেতাকর্মী পার্টি অফিসের সামনের সড়কে অবস্থান নিলেও তাদের বাঁধায় পার্টি অফিসে ঢুকতে পারেন নাই। পরবর্তীতে খৈয়ম-সাবু’র সমর্থকদের একটি মিছিল পার্টি অফিসে ঢুকতে গেলেই শুর হয় মারামারি।