১১:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চ্যানেল ড্রেজিংয়ের সফলতা— এই প্রথম সাড়ে ৮ মিটার গভীরতা জাহাজ পন্য খালাস শেষে মোংলা বন্দর ত্যাগ

মোংলা বন্দরের চ্যানেল ড্রেজিংয়ের ফলে এই প্রথমবারের মতো মোংলা বন্দরে নঙ্গর করেছিল সাড়ে ৮ মিটার গভীরতা সম্পন্ন বানিজ্যিক জাহাজ “এমভি মাস্ক নুসনতারা”। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিভিন্ন পন্য বোঝাই ৪৮৯ টি কন্টেইনার নিয়ে সিঙ্গাপুর পতাকাবাহী জাহাজটি বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে এসে নঙ্গর করে পন্য খালাস শেষে শুক্রবার দুপুর ২ টার দিকে বন্দর ত্যাগ করেছে। জাহাজটি থেকে কন্টইনার খালাস করতে সময় লেগেছে মাত্র ২৪ ঘন্টা, পরে মোংলা বন্দর থেকে ৩৬৭ টিউজ কন্টেইনার বোঝাই করে বন্দর ছেড়ে যায় জাহাজটি।

বন্দর সুত্রে জানায়, ৯০ দশকের পর থেকে মোংলা বন্দরের জাহাজ আগমন-নির্গমনের প্রধান পশুর চ্যানেল পলি পরে ভরাট হওয়ার ফলে পন্য বোঝাই বেশী ড্রাফটের দেশ-বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ মোংলা বন্দরে প্রবেশ করতে পারতো না। বর্তমান সরকার মৃত প্রায় মোংলা সমুদ্র বন্দরটি উজ্জীবিত করার জন্য দুই পর্বে চ্যানেল ড্রেজিংয়ের একটি মেঘা প্রকল্প গ্রহন করেন। ২০২০ সালে ৭শ কোটি টাকা ব্যায় আউটার বার ড্রেজিং শেষ করে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৭শ ৯৪ কোটি টাকা ব্যায় ইনার বার ড্রেজিং শুরু করে, যা এখন চলমান রয়েছে। যার ফলে এই প্রথমবারের মতো সারে ৮ মিটার গভীরতা ড্রাফটের কন্টেইনারবাহী জাহাজ”মোংলা বন্দরের জেটিতে অনায়াসে প্রবেশ করেছে বিদেশী জাহাজ “এমভি মারস্ক নুসানতারা” ।

জাহাজটি বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে এসে নঙ্গর করে কন্টেইনার খালাস শুরু করে। সিঙ্গাপুর পতাকাবাহী এ জাহাজটি বেশ কয়েকটি দেশের বন্দর হয়ে প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দর, পরে মোংলা বন্দরে পৌছাতে প্রায় ১৫ দিন সময় লেগেছে। এবারের চালানে আমদানী করা পন্য বোঝাই ৩১৫ বক্সে ৪৮৯ টিইউজ কন্টেইনার খালাস করা হয়েছে। পরে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মোংলা বন্দর থেকে ২৬৩ বক্সে ৩৬৭ টিইউজ কন্টেইনার বোঝাই করে দুপুর ২টার দিকে বন্দর ত্যাগ করেছে সিঙ্গাপুর পতাকাবাহী জাহাজটি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাবসার পরিধি ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তার মধ্যে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ অন্যতম। বর্তমানে এ বন্দর দিয়ে বেড়েছে আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রমও। এছাড়া আগে এ বন্দর দিয়ে আমদানী পন্যের চাহিদা থাকলেও রপ্তানী পন্য বিদেশে কম যেতো, এখন গার্মেন্টস’র তৈরী পন্যসহ বিভিন্ন পন্য রপ্তানি শুরু হয়েছে শুধু পদ্মাসেতু চালু হওয়ার ফলে। ডাকার ব্যাবসায়ী চট্রগ্রাম বন্দরে না গিয়ে এখন মোংলা বন্দর ব্যাবহার করতে আগ্রহী হযেছে। তাদের সময় এবং অর্থ দুটোই সাশ্রায় হয় বলেই এ বন্দর ব্যাবহার করা শুরু করেছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব মাকরুজ্জামান জানান, দেশের একটি বন্দর সচল রাখতে হলে প্রথমে চ্যানেল সচল থাকতে হয়।তাই মৃত বন্দরকে পুনরায় চালু করতে সরকারের সহায়তা, বন্দর চেয়ারম্যান সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তদের প্রচেষ্টায় চ্যানেল ড্রেজিং চলমান রয়েছে। এটির কাজ শেষ হলে এর চেয়েও বেশী গভীরতাসম্পন্ন দেশ-বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ বিদেশ থেকে সরাসরী মোংলা বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে৷ আমরা বন্দর ব্যাবহারকারীদের সর্বক্ষনিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছি। যাতে আমদানী-রপ্তানীকারক ব্যাবসায়ীরা এ বন্দর ব্যাবহার করে লাভবান হতে পারে, জাহাজ আসলে যাকে সল্প সময় পন্য খালাস করে জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করতে পারে সে জন্য কর্তৃপক্ষের সহায়তা অব্যাহত থাকে এমনটাই আশা এখানকার ব্যাবসায়ীদের।##

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

চ্যানেল ড্রেজিংয়ের সফলতা— এই প্রথম সাড়ে ৮ মিটার গভীরতা জাহাজ পন্য খালাস শেষে মোংলা বন্দর ত্যাগ

Update Time : ০৮:৩১:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অগাস্ট ২০২৩

মোংলা বন্দরের চ্যানেল ড্রেজিংয়ের ফলে এই প্রথমবারের মতো মোংলা বন্দরে নঙ্গর করেছিল সাড়ে ৮ মিটার গভীরতা সম্পন্ন বানিজ্যিক জাহাজ “এমভি মাস্ক নুসনতারা”। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিভিন্ন পন্য বোঝাই ৪৮৯ টি কন্টেইনার নিয়ে সিঙ্গাপুর পতাকাবাহী জাহাজটি বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে এসে নঙ্গর করে পন্য খালাস শেষে শুক্রবার দুপুর ২ টার দিকে বন্দর ত্যাগ করেছে। জাহাজটি থেকে কন্টইনার খালাস করতে সময় লেগেছে মাত্র ২৪ ঘন্টা, পরে মোংলা বন্দর থেকে ৩৬৭ টিউজ কন্টেইনার বোঝাই করে বন্দর ছেড়ে যায় জাহাজটি।

বন্দর সুত্রে জানায়, ৯০ দশকের পর থেকে মোংলা বন্দরের জাহাজ আগমন-নির্গমনের প্রধান পশুর চ্যানেল পলি পরে ভরাট হওয়ার ফলে পন্য বোঝাই বেশী ড্রাফটের দেশ-বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ মোংলা বন্দরে প্রবেশ করতে পারতো না। বর্তমান সরকার মৃত প্রায় মোংলা সমুদ্র বন্দরটি উজ্জীবিত করার জন্য দুই পর্বে চ্যানেল ড্রেজিংয়ের একটি মেঘা প্রকল্প গ্রহন করেন। ২০২০ সালে ৭শ কোটি টাকা ব্যায় আউটার বার ড্রেজিং শেষ করে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৭শ ৯৪ কোটি টাকা ব্যায় ইনার বার ড্রেজিং শুরু করে, যা এখন চলমান রয়েছে। যার ফলে এই প্রথমবারের মতো সারে ৮ মিটার গভীরতা ড্রাফটের কন্টেইনারবাহী জাহাজ”মোংলা বন্দরের জেটিতে অনায়াসে প্রবেশ করেছে বিদেশী জাহাজ “এমভি মারস্ক নুসানতারা” ।

জাহাজটি বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্দরের ৯ নম্বর জেটিতে এসে নঙ্গর করে কন্টেইনার খালাস শুরু করে। সিঙ্গাপুর পতাকাবাহী এ জাহাজটি বেশ কয়েকটি দেশের বন্দর হয়ে প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দর, পরে মোংলা বন্দরে পৌছাতে প্রায় ১৫ দিন সময় লেগেছে। এবারের চালানে আমদানী করা পন্য বোঝাই ৩১৫ বক্সে ৪৮৯ টিইউজ কন্টেইনার খালাস করা হয়েছে। পরে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মোংলা বন্দর থেকে ২৬৩ বক্সে ৩৬৭ টিইউজ কন্টেইনার বোঝাই করে দুপুর ২টার দিকে বন্দর ত্যাগ করেছে সিঙ্গাপুর পতাকাবাহী জাহাজটি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাবসার পরিধি ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তার মধ্যে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ অন্যতম। বর্তমানে এ বন্দর দিয়ে বেড়েছে আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রমও। এছাড়া আগে এ বন্দর দিয়ে আমদানী পন্যের চাহিদা থাকলেও রপ্তানী পন্য বিদেশে কম যেতো, এখন গার্মেন্টস’র তৈরী পন্যসহ বিভিন্ন পন্য রপ্তানি শুরু হয়েছে শুধু পদ্মাসেতু চালু হওয়ার ফলে। ডাকার ব্যাবসায়ী চট্রগ্রাম বন্দরে না গিয়ে এখন মোংলা বন্দর ব্যাবহার করতে আগ্রহী হযেছে। তাদের সময় এবং অর্থ দুটোই সাশ্রায় হয় বলেই এ বন্দর ব্যাবহার করা শুরু করেছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব মাকরুজ্জামান জানান, দেশের একটি বন্দর সচল রাখতে হলে প্রথমে চ্যানেল সচল থাকতে হয়।তাই মৃত বন্দরকে পুনরায় চালু করতে সরকারের সহায়তা, বন্দর চেয়ারম্যান সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তদের প্রচেষ্টায় চ্যানেল ড্রেজিং চলমান রয়েছে। এটির কাজ শেষ হলে এর চেয়েও বেশী গভীরতাসম্পন্ন দেশ-বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ বিদেশ থেকে সরাসরী মোংলা বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে৷ আমরা বন্দর ব্যাবহারকারীদের সর্বক্ষনিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছি। যাতে আমদানী-রপ্তানীকারক ব্যাবসায়ীরা এ বন্দর ব্যাবহার করে লাভবান হতে পারে, জাহাজ আসলে যাকে সল্প সময় পন্য খালাস করে জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করতে পারে সে জন্য কর্তৃপক্ষের সহায়তা অব্যাহত থাকে এমনটাই আশা এখানকার ব্যাবসায়ীদের।##