০৩:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সালথায় ছাত্রলীগ সভাপতির ওপর হামলা ঘটনায় আরেক ছাত্রলীগ নেতাকে শোকজ

ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের (২৬) ওপর হামলার ঘটনায় সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহকে শোকজ করেছে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ।

শনিবার রাতে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক শাশ্বত চক্রবর্তী অর্ঘ্য স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। অভিযুক্ত ইসমাইল জবিউল্লাহ উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বড় বালিয়া গ্রামের মনি মোল্লার ছেলে।

শোকজে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ফরিদপুর জেলা শাখার এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে, সালথা উপজেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ
সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠন পরিপন্থী কার্যক্রমে লিপ্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কেন ইসমাইল জবিউল্লাহর
বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা তার কারণ লিখিতভাবে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ফরিদপুর
জেলা শাখার দপ্তর সেলে জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হলো।

এর আগে শুক্রবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া গট্টি বাজারে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহ। ফিরোজ খান সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া গ্রামের
ব্যবসায়ী মমরেজ খানের ছেলে।

হামলার বিষয়ে ফিরোজ খান রাজ জানিয়েছিলে, ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়ান ভাইয়ের জন্য ধান কিনতে শুক্রবার সন্ধ্যায় সালথা উপজেলার বালিয়া বাজারে গিয়ে ধান কিনে ইজিবাইকে উঠানোর পরে ফ্লেক্সিলোডের দোকানে গিয়ে বিকাশ নম্বর থেকে টাকা বের করতে গেলে হঠাৎ পেছন থেকে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহসহ ১৫ থেকে ২০ জন আমার ওপর হামলা করে। এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, থাপ্পড় মারতে থাকেন তারা। এসময় স্থানীয় লোকজন তাদেরকে প্রতিহত করেন।

হামলার ব্যাপারে ইসমাইল জবিউল্লাহর বাবা মনি মোল্লা বলেছিলেন, আমার ছেলের এইচএসসি পরীক্ষার সময় ফিরোজ খান রাজ একটি অঘটন ঘটিয়েছিল। এজন্য এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে, আমার ছেলে এ ঘটনায় জড়িত নয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীরা জানান, সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের মধ্যে দুটি গ্রপ রয়েছে। একটি গ্রুপের
নেতৃত্বে রয়েছেন ছাত্রলীগের (বহিষ্কৃত) সভাপতি রায়মোহন রায় ও সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান
রাজ। এই নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েকবার হামলা ও মামলা হয়েছে। এই কারনে ফিরোজ খান রাজের উপরে হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

তবে এই হামলার ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর নির্দেশে স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করা হবে বিধায় এখনো মামলা করা হয়নি। এর আগেও একাধিক বার লাবু চৌধুরী ছাত্রলীগের দুই গ্রুপকে এক করেছেন। হামলার বিষয়ে শনিবার একাধিক অনলাইন পত্রিকায় হামলার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে এই শোকজ দেওয়া হয়।

শোকজের ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহর বিরুদ্ধে একই উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিন কার্যদিবসের মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে। সন্তোষজনক উত্তর বা জবাব না পেলে প্রয়োজনে ইসমাইল জবিউল্লাহকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হবে।

সালথা থানার এসআই সৈয়দ আওলাদ হোসেন বলেন, হামলার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

সালথায় ছাত্রলীগ সভাপতির ওপর হামলা ঘটনায় আরেক ছাত্রলীগ নেতাকে শোকজ

Update Time : ০৬:২০:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৩

ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের (২৬) ওপর হামলার ঘটনায় সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহকে শোকজ করেছে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ।

শনিবার রাতে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক শাশ্বত চক্রবর্তী অর্ঘ্য স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। অভিযুক্ত ইসমাইল জবিউল্লাহ উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বড় বালিয়া গ্রামের মনি মোল্লার ছেলে।

শোকজে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ফরিদপুর জেলা শাখার এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে, সালথা উপজেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ
সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠন পরিপন্থী কার্যক্রমে লিপ্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কেন ইসমাইল জবিউল্লাহর
বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা তার কারণ লিখিতভাবে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ফরিদপুর
জেলা শাখার দপ্তর সেলে জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হলো।

এর আগে শুক্রবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া গট্টি বাজারে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহ। ফিরোজ খান সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া গ্রামের
ব্যবসায়ী মমরেজ খানের ছেলে।

হামলার বিষয়ে ফিরোজ খান রাজ জানিয়েছিলে, ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়ান ভাইয়ের জন্য ধান কিনতে শুক্রবার সন্ধ্যায় সালথা উপজেলার বালিয়া বাজারে গিয়ে ধান কিনে ইজিবাইকে উঠানোর পরে ফ্লেক্সিলোডের দোকানে গিয়ে বিকাশ নম্বর থেকে টাকা বের করতে গেলে হঠাৎ পেছন থেকে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহসহ ১৫ থেকে ২০ জন আমার ওপর হামলা করে। এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, থাপ্পড় মারতে থাকেন তারা। এসময় স্থানীয় লোকজন তাদেরকে প্রতিহত করেন।

হামলার ব্যাপারে ইসমাইল জবিউল্লাহর বাবা মনি মোল্লা বলেছিলেন, আমার ছেলের এইচএসসি পরীক্ষার সময় ফিরোজ খান রাজ একটি অঘটন ঘটিয়েছিল। এজন্য এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে, আমার ছেলে এ ঘটনায় জড়িত নয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীরা জানান, সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের মধ্যে দুটি গ্রপ রয়েছে। একটি গ্রুপের
নেতৃত্বে রয়েছেন ছাত্রলীগের (বহিষ্কৃত) সভাপতি রায়মোহন রায় ও সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান
রাজ। এই নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েকবার হামলা ও মামলা হয়েছে। এই কারনে ফিরোজ খান রাজের উপরে হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

তবে এই হামলার ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর নির্দেশে স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করা হবে বিধায় এখনো মামলা করা হয়নি। এর আগেও একাধিক বার লাবু চৌধুরী ছাত্রলীগের দুই গ্রুপকে এক করেছেন। হামলার বিষয়ে শনিবার একাধিক অনলাইন পত্রিকায় হামলার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে এই শোকজ দেওয়া হয়।

শোকজের ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহর বিরুদ্ধে একই উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিন কার্যদিবসের মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে। সন্তোষজনক উত্তর বা জবাব না পেলে প্রয়োজনে ইসমাইল জবিউল্লাহকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হবে।

সালথা থানার এসআই সৈয়দ আওলাদ হোসেন বলেন, হামলার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।