রাজবাড়ীর পাংশায় জান দলিল করার অভিযোগে সাব রেজিষ্টারসহ ৮ জনের নামে মোকাম রাজবাড়ী বিজ্ঞ দুই নম্বর আমলী আদালতে একটি মামলা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার জেলার পাংশা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৈশালা গ্রামের রতন বিশ্বাসের ছেলে নুজদার বিশ্বাস বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বাদি পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম রফিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলাটি আদালত আমলে নিয়েছে এবং মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
মামলার আসামীরা হলেন, খিরোদ কুমার সরকার, আজিজুল ইসলাম, আকবর আলী মন্ডল, বাসনা সরকার, মো. রাসেল মন্ডল, সিরাজুল হক মিঠু ও সাকিল মাহমুদ সুজন। মামলামর প্রধান আসামী খিরোদ কুমার সরকার পাংশা পৌরসভাধিন মৈশালা গ্রামের মৃত বিনোদ কুমার সরকারের ছেলে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের পূর্বপ্রেমটিয়া গ্রামের মৃত পুস্প চন্ত্র শর্মার ছেলে সূর্য্য কুমার শর্মার নিকট থেকে পাংশা পৌরসভাধীন মৈশালা মৌজার ১৭৪৮ নম্বর খতিয়ানের ১১৮১ নম্বর দাগের তিন শতাংশ জামি ক্রয় করেন মামলার বাদি নুজদার বিশ্বাস। জমিটির নামজারির মামলা নম্বর- ৩,০২৬(ওঢ—ও)/২০২৩—২৩। ডিসিআর নম্বর- উঈজ২৩৮২৭৩২০৪০৩০২৬। পাংশা সাব—রেজিষ্ট্রার অফিসের মাধ্যমে গত ১৪ জুন—২০২৩ ইং তারিখে সূর্য্য কুমার শর্মা জমিটি নুজদার বিশ্বাসের নামে দলিল করে দেন। একই জমি মামলা প্রধান আসামী খিরোদ কুমার সরকার দাতা সেজে ২০১১ সালের একটি ভূয়া এবং জাল (পাওয়ার) দলিল দেখিয়ে ২০২৩ সালের গত ১ আগস্টে পাংশা সাব- রেজিষ্ট্রী অফিসের মাধ্যমে তার স্ত্রী বাসনা সরকারের নামে একটি কবলা দলিল করে দেয়। ২০১১ সালের করা দলিলটি যে জাল, তা জেনে—শুনে নিজেরা পদ মর্যাদা মোতাবেক লিখেছেন দলিলের সাথে সম্পৃক্ত থাকা দলিল লেখক, ইসাদি, স্বাক্ষী এবং সাব রেজিষ্ট্রার।
মামলার বাদি নুজদার বিশ্বাস জানান, তিনি সূর্য্য কুমার শর্মার কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেছেন। গত ১৪ জুন—২০২৩ ইং তারিখে তার নামে জমি রেজিষ্ট্রী হয়ে গেছে। রেজিষ্ট্রী হওয়ার এক দেড় মাস পরেই খিরোদ কুমার একটি ভূয়া ও জাল দলিল করে তার স্ত্রী বাসনা সরকারের নামে জাল দলিল করেছেন। তিনি এই জাল দলিল করার সাথে সম্পৃক্তদের শাস্তি দাবি করেন।
সূর্য্য কুমার শর্মা জানান, এই জমির মূল মালিক ছিলেন তার ভাই রাজকুমার শর্মা। তার ভাই ইন্ডিয়াতে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলে ওয়ারিশ সূত্রে তিনি মালিক হন। তারপর জমিটি বিক্রি করেন।
মামলার প্রধান আসামী খিরোদ কুমার সরকার জানান, জমির মূল মালিক রাজ কুমারের নিকট থেকে কিনেছি পরে আমার স্ত্রীর নামে দলিল করে দিয়েছি। উক্ত জমির বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব কাগজপত্র রেজিষ্ট্রী অফিসে দিয়ে দিয়েছি। আমার কাছে কোন কাগজ নেই।
মামলার অপর আসামী (দলিল লেখক) শাকিল মাহমুদ সুজন জানান, দলিল লেখার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। সম্পুর্ণ কাগজপত্র দেখে দলিলটি করা হয়েছে।
পাংশা সাব- রেজিষ্ট্রার মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, সরকারি বিধিমতাবেক সকল আইন ফলো করে উক্ত দলিলের কাজ করা হয়েছে।