১২:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খসে পড়ছে পলেস্তরা, ঝুঁকিতে অর্ধশতাধিক রোগী

মাগুরার শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। প্রাণ ঝুঁকিতে রয়েছেন শিশু, মহিলা ও পুরুষ সহ বিভিন্ন বয়সের অর্ধশতাধিক রোগী।

এছাড়াও হাসপাতালের একটি অকেজো পানির ট্যাংকি হেলে পড়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আজ বুধবার হাসপাতালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চাশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের ল্যাব, টেকনিক্যাল ও জরুরী বিভাগসহ পুরাতন ভবনের বিভিন্ন অংশের ছাদ ও দেয়াল থেকে পলেস্তরা খসে পড়ছে যার নিচ দিয়ে প্রতিদিন শত শত সেবা গ্রহীতা ও হাসপাতালের স্টাফরা যাতায়াত করছে। ল্যাব ও মেকানিক্যাল বিভাগের তিনটি কক্ষের দেওয়াল ও ছাদের অধিকাংশ জায়গা ড্যাম ও তলাদেশবিহীন। অনেক জায়গা রয়েছে ছোট-বড় ফাটল । যার নিচে বসে কাজ করছেন মেকানিক্যাল বিভাগের বেশ কয়েকজন কর্মী।

এছাড়াও শিশু ও প্রসূতি বিভাগের হলরুমে মাঝে মাঝে পলেস্তরার বড় বড় অংশ খসে পড়ছে। সেখানে সেবা নিতে আসা সদ্য নবজাতকের এক মায়ের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আজ দুইদিন হয়েছে আমার একটি কন্যা সন্তান হয়েছে তাকে নিয়ে আমারা খুব ভয়ে আছি, মনে হচ্ছে যে কোন সময় পলেস্তরা খসে মাথার উপর পড়তে পারে।

অপর একজন গর্ভবতী মহিলার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, হাসপাতালের সেবা ভালো হলেও ভৌতিক কাঠামোর অবস্থা খুবই খারাপ এবং বিপদজনক।

সরেজমিন ঘুরে আরো দেখা যায়, হাসপাতালের উত্তর পশ্চিম কর্নারে থাকা একটি পরিত্যাক্ত সুদীর্ঘ পানির ট্যাংকি হেলে পড়েছে যার তিন চতুর্থাংশ ফেটে গেছে। বড় ধরনের ঝড় বা ভূমিকম্প হলে যে কোন সময় সুদীর্ঘ পানির টাংকিটি ভূমির উপর আঘাত হানতে পারে বলে মনে করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

পানির ট্যাংকের ঠিক পাশেই আবাসিকহলের একটি কক্ষে হাসপাতালের জুনিয়র মেকানিক শামসুর রহমান ও তার পরিবার বসবাস করে। শামসুর রহমান বলেন, আমি ও আমার পরিবার সবসময় ভয়ে থাকি কারণ ঝড় হলেই পানির ট্যাংকটি দুলতে থাকে, যে কোন সময় ভেঙ্গে আমাদের মাথার উপর পড়তে পারে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আব্বাস উদ্দিন বলেন, অনেক আগেই পানির ট্যাংকটি অকেজো ঘোষণা করা হয়েছে তবে কি কারণে অব্যবহৃত পানির টাংকিটি অপসারণ করা হচ্ছে না তা আমার জানা নাই পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, শুধু পানির ট্যাংকি নয় হাসপাতালের বাউন্ডারির প্রাচীর নিচু হওয়ায় প্রায়ই ছোট বড় চুরির ঘটনা ঘটছে হাসপাতালটিতে। হাসপাতালের পূর্ব পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানগুলোর কারণে একদিকে যেমন হাসপাতালের বাউন্ডারির মধ্যে ময়লা ফেলা হচ্ছে, অপরদিকে প্রাচীর হেলে পড়ছে। তাই অতিসত্বর অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করা প্রয়োজন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সাইমুন নেছা বলেন, সুদীর্ঘকাল থেকে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের সংস্কার না করার কারণে ওয়াল ও ছাদের তলদেশ ড্যাম হয়ে পলেস্তরা খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলেই পলেসতরা খসে পড়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি হাসপাতালের স্টাফ ও রোগীরা প্রায়ই ছোট বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন। এছাড়াও অকেজো পানির টাংকিটি হেলে পড়ায় ও বাউন্ডারির প্রাচীর নিচু হওয়ায় হাসপাতালের আবাসিক হলে থাকা ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

খসে পড়ছে পলেস্তরা, ঝুঁকিতে অর্ধশতাধিক রোগী

Update Time : ০৮:৪৫:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মাগুরার শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। প্রাণ ঝুঁকিতে রয়েছেন শিশু, মহিলা ও পুরুষ সহ বিভিন্ন বয়সের অর্ধশতাধিক রোগী।

এছাড়াও হাসপাতালের একটি অকেজো পানির ট্যাংকি হেলে পড়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আজ বুধবার হাসপাতালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চাশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের ল্যাব, টেকনিক্যাল ও জরুরী বিভাগসহ পুরাতন ভবনের বিভিন্ন অংশের ছাদ ও দেয়াল থেকে পলেস্তরা খসে পড়ছে যার নিচ দিয়ে প্রতিদিন শত শত সেবা গ্রহীতা ও হাসপাতালের স্টাফরা যাতায়াত করছে। ল্যাব ও মেকানিক্যাল বিভাগের তিনটি কক্ষের দেওয়াল ও ছাদের অধিকাংশ জায়গা ড্যাম ও তলাদেশবিহীন। অনেক জায়গা রয়েছে ছোট-বড় ফাটল । যার নিচে বসে কাজ করছেন মেকানিক্যাল বিভাগের বেশ কয়েকজন কর্মী।

এছাড়াও শিশু ও প্রসূতি বিভাগের হলরুমে মাঝে মাঝে পলেস্তরার বড় বড় অংশ খসে পড়ছে। সেখানে সেবা নিতে আসা সদ্য নবজাতকের এক মায়ের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আজ দুইদিন হয়েছে আমার একটি কন্যা সন্তান হয়েছে তাকে নিয়ে আমারা খুব ভয়ে আছি, মনে হচ্ছে যে কোন সময় পলেস্তরা খসে মাথার উপর পড়তে পারে।

অপর একজন গর্ভবতী মহিলার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, হাসপাতালের সেবা ভালো হলেও ভৌতিক কাঠামোর অবস্থা খুবই খারাপ এবং বিপদজনক।

সরেজমিন ঘুরে আরো দেখা যায়, হাসপাতালের উত্তর পশ্চিম কর্নারে থাকা একটি পরিত্যাক্ত সুদীর্ঘ পানির ট্যাংকি হেলে পড়েছে যার তিন চতুর্থাংশ ফেটে গেছে। বড় ধরনের ঝড় বা ভূমিকম্প হলে যে কোন সময় সুদীর্ঘ পানির টাংকিটি ভূমির উপর আঘাত হানতে পারে বলে মনে করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

পানির ট্যাংকের ঠিক পাশেই আবাসিকহলের একটি কক্ষে হাসপাতালের জুনিয়র মেকানিক শামসুর রহমান ও তার পরিবার বসবাস করে। শামসুর রহমান বলেন, আমি ও আমার পরিবার সবসময় ভয়ে থাকি কারণ ঝড় হলেই পানির ট্যাংকটি দুলতে থাকে, যে কোন সময় ভেঙ্গে আমাদের মাথার উপর পড়তে পারে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আব্বাস উদ্দিন বলেন, অনেক আগেই পানির ট্যাংকটি অকেজো ঘোষণা করা হয়েছে তবে কি কারণে অব্যবহৃত পানির টাংকিটি অপসারণ করা হচ্ছে না তা আমার জানা নাই পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, শুধু পানির ট্যাংকি নয় হাসপাতালের বাউন্ডারির প্রাচীর নিচু হওয়ায় প্রায়ই ছোট বড় চুরির ঘটনা ঘটছে হাসপাতালটিতে। হাসপাতালের পূর্ব পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানগুলোর কারণে একদিকে যেমন হাসপাতালের বাউন্ডারির মধ্যে ময়লা ফেলা হচ্ছে, অপরদিকে প্রাচীর হেলে পড়ছে। তাই অতিসত্বর অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করা প্রয়োজন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সাইমুন নেছা বলেন, সুদীর্ঘকাল থেকে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের সংস্কার না করার কারণে ওয়াল ও ছাদের তলদেশ ড্যাম হয়ে পলেস্তরা খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলেই পলেসতরা খসে পড়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি হাসপাতালের স্টাফ ও রোগীরা প্রায়ই ছোট বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন। এছাড়াও অকেজো পানির টাংকিটি হেলে পড়ায় ও বাউন্ডারির প্রাচীর নিচু হওয়ায় হাসপাতালের আবাসিক হলে থাকা ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।