১১:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেঘনায় ইলিশ, কেজি ৬০০ টাকা!

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৪১:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১৮৪ Time View

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মেঘনা উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের দ্বিতীয় বড় বাজার নামে পরিচিত উপজেলার ৯টি মাছঘাটে বেড়েছে ইলিশের আমদানি। মাছঘাটগুলোতে ৬০০-১০০০ টাকা কেজি দরে ইলিশ মাছ বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার ও বুধবার এ বাজারে ইলিশ এসেছে প্রায় এক হাজার মণ। তবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ভারতে দুই হাজার ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দেওয়ায় ইলিশের দাম আপাতত কমছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রায়পুরের মেঘনাপাড়ের জেলেরা ৯টি মাছঘাটে রায়পুর, লক্ষ্মীপুর সদর, ভোলা, বরিশাল, শরীয়তপুর ও চাঁদপুরের বহু জেলে মাছ বিক্রি করে থাকেন। সরেজমিন কয়েকটি ঘাট ঘুরে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে এ তথ্য।

রায়পুরের মাছঘাটগুলো হলো- চর জালিয়ার গ্রামে সাইজুদ্দিন মোল্লা মাছঘাট, চর ইন্দুরিয়া আলতাফ মাস্টারের মাছঘাট, আলতাফ মাস্টারের বাহিরের ঘাট, পুরান বেড়ি মাছঘাট, দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের হাজীমারা মাছঘাট, পানিরঘাট মাছঘাট, মিয়ারহাটে রাহুল মাছঘাট, টুনুর চরে দিদার মোল্লা মাছঘাট। এগুলোর মধ্যে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলতাফ মাস্টারের মালিকানায় উত্তর ও দক্ষিণ চরবংশীতে ৪টি। নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৭ হাজার ৫০০। এদের মধ্যে জাটকা জেলে বা নদীর ওপর নির্ভরশীলদের মধ্যে রয়েছেন ৬ হাজার ৮৫০ জন।

চরবংশী আলতাফ মাস্টার ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদিন বলেন, ভারতে মাছ রফতানির অনুমতি দেওয়ায় এলসির মাধ্যমে সে দেশে মাছ যাবে শুনেছি। ইতোমধ্যে রায়পুরের কয়েকটি মাছঘাট থেকে ঢাকার ব্যবসায়ীরা মাছ কেনা শুরু করেছেন। সে কারণে মাছের দাম তুলনামূলক বেশি। মেঘনার রায়পুরের অংশে ইলিশ খুব কম। তবে বরিশাল, ভোলা, হাতিয়া, চাঁদপুরের অঞ্চল থেকে ইলিশের আমদানি বেড়েছে।

বাজারে বর্তমানে ৪০০-৭০০ গ্রামের উপকূলীয় ইলিশ প্রতি মণ ১৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা (সর্বোচ্চ ৫৭০ টাকা কেজি), ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ ২৫ হাজার থেকে ৩০-৩২ হাজার টাকায় (সর্বোচ্চ ৮৫০ টাকা কেজি) এবং এক কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৪০ হাজার থেকে ৪২ হাজার টাকা (সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা কেজি) বিক্রি হচ্ছে। তবে রায়পুর মেঘনা নদী অঞ্চলের প্রতি মণ ইলিশ আরও প্রায় পাঁচ হাজার টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আড়তের মালিকরা।

রায়পুর শহরের মাছ বাজারের ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদ বলেন, গত বছর একই সময়ে এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে। তবে এবার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ৩৪০-৪৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশের প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১০০০ টাকা এবং এক কেজির ওপরের ইলিশ প্রতি কেজি ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রায়পুর হায়দরগঞ্জের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য মো. ইউসুফ বলেন, গত দুই দিন ধরে এখানকার বাজারে প্রায় এক হাজার মণ ইলিশের আমদানি হয়েছে। জানতে পেরেছি, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৫২ প্রতিষ্ঠানকে ভারতে ইলিশ রফতানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। এ কারণে বাজারে ইলিশের আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি।

রায়পুরে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, মাসের হয়তো ২০ দিন বাজারে ইলিশ কম এসেছে, কিন্তু মাসের বাকি পাঁচ দিনে যে পরিমাণ ইলিশ আসবে তা পুরো মাসের চাহিদা পূরণ করবে। ইলিশের ক্ষেত্রে এমনটিই হয়। কাজেই হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। তাই প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। পুরো অক্টোবর এবং নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

মেঘনায় ইলিশ, কেজি ৬০০ টাকা!

Update Time : ১২:৪১:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মেঘনা উপকূলীয় এলাকায় জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের দ্বিতীয় বড় বাজার নামে পরিচিত উপজেলার ৯টি মাছঘাটে বেড়েছে ইলিশের আমদানি। মাছঘাটগুলোতে ৬০০-১০০০ টাকা কেজি দরে ইলিশ মাছ বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার ও বুধবার এ বাজারে ইলিশ এসেছে প্রায় এক হাজার মণ। তবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ভারতে দুই হাজার ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দেওয়ায় ইলিশের দাম আপাতত কমছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রায়পুরের মেঘনাপাড়ের জেলেরা ৯টি মাছঘাটে রায়পুর, লক্ষ্মীপুর সদর, ভোলা, বরিশাল, শরীয়তপুর ও চাঁদপুরের বহু জেলে মাছ বিক্রি করে থাকেন। সরেজমিন কয়েকটি ঘাট ঘুরে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে এ তথ্য।

রায়পুরের মাছঘাটগুলো হলো- চর জালিয়ার গ্রামে সাইজুদ্দিন মোল্লা মাছঘাট, চর ইন্দুরিয়া আলতাফ মাস্টারের মাছঘাট, আলতাফ মাস্টারের বাহিরের ঘাট, পুরান বেড়ি মাছঘাট, দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের হাজীমারা মাছঘাট, পানিরঘাট মাছঘাট, মিয়ারহাটে রাহুল মাছঘাট, টুনুর চরে দিদার মোল্লা মাছঘাট। এগুলোর মধ্যে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলতাফ মাস্টারের মালিকানায় উত্তর ও দক্ষিণ চরবংশীতে ৪টি। নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৭ হাজার ৫০০। এদের মধ্যে জাটকা জেলে বা নদীর ওপর নির্ভরশীলদের মধ্যে রয়েছেন ৬ হাজার ৮৫০ জন।

চরবংশী আলতাফ মাস্টার ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদিন বলেন, ভারতে মাছ রফতানির অনুমতি দেওয়ায় এলসির মাধ্যমে সে দেশে মাছ যাবে শুনেছি। ইতোমধ্যে রায়পুরের কয়েকটি মাছঘাট থেকে ঢাকার ব্যবসায়ীরা মাছ কেনা শুরু করেছেন। সে কারণে মাছের দাম তুলনামূলক বেশি। মেঘনার রায়পুরের অংশে ইলিশ খুব কম। তবে বরিশাল, ভোলা, হাতিয়া, চাঁদপুরের অঞ্চল থেকে ইলিশের আমদানি বেড়েছে।

বাজারে বর্তমানে ৪০০-৭০০ গ্রামের উপকূলীয় ইলিশ প্রতি মণ ১৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা (সর্বোচ্চ ৫৭০ টাকা কেজি), ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ ২৫ হাজার থেকে ৩০-৩২ হাজার টাকায় (সর্বোচ্চ ৮৫০ টাকা কেজি) এবং এক কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৪০ হাজার থেকে ৪২ হাজার টাকা (সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা কেজি) বিক্রি হচ্ছে। তবে রায়পুর মেঘনা নদী অঞ্চলের প্রতি মণ ইলিশ আরও প্রায় পাঁচ হাজার টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আড়তের মালিকরা।

রায়পুর শহরের মাছ বাজারের ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদ বলেন, গত বছর একই সময়ে এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে। তবে এবার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ৩৪০-৪৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশের প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১০০০ টাকা এবং এক কেজির ওপরের ইলিশ প্রতি কেজি ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রায়পুর হায়দরগঞ্জের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য মো. ইউসুফ বলেন, গত দুই দিন ধরে এখানকার বাজারে প্রায় এক হাজার মণ ইলিশের আমদানি হয়েছে। জানতে পেরেছি, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৫২ প্রতিষ্ঠানকে ভারতে ইলিশ রফতানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। এ কারণে বাজারে ইলিশের আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি।

রায়পুরে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, মাসের হয়তো ২০ দিন বাজারে ইলিশ কম এসেছে, কিন্তু মাসের বাকি পাঁচ দিনে যে পরিমাণ ইলিশ আসবে তা পুরো মাসের চাহিদা পূরণ করবে। ইলিশের ক্ষেত্রে এমনটিই হয়। কাজেই হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। তাই প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। পুরো অক্টোবর এবং নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করি।