০৬:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেতু হবে নাকি টানলে হবে ? যা জানালো পরিকল্পনা মন্ত্রাণালয়

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৪৩:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ৬৬৩ Time View

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী পদ্মা নদীতে আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হবে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ নৌরুটে। তবে এটি সেতু হবে নাকি টানেল, তা নিয়ে এখানো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, এ ধরনের স্থানে সেতু নির্মাণে ব্যয় হয় অনেক বেশি। আবার সময়ও প্রয়োজন হয় অতিরিক্ত। এতে করে প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা জটিলতাও দেখা দেয়, যা ব্যয় বৃদ্ধি করে। আর নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ করা হলে একদিকে ব্যয়সাশ্রয়ী হয়, অন্যদিকে সময়ও কম লাগে। এর আগে টানেল নির্মাণের ক্ষেত্রে দেশের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে, যা আগামী বছরের মধ্যেই শেষ হবে। এতে সরকার ও দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর বেশ ভালোই অভিজ্ঞতা হয়েছে। আবার পদ্মা সেতুর বড় স্থাপনা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করতে পেরেও অনন্য অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতার স্বাক্ষর রেখেছে সরকার। এ জন্য পদ্মা নদীর অপর দুই প্রান্তে (পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ) মানিকগঞ্জ আর রাজবাড়ীকে যুক্ত করতে টানেল, নাকি সেতু নির্মাণ করা হবে এটি নিয়ে একটি উচ্চতর সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। তবে চলতি বছরের মধ্যে সমীক্ষা হয়তো করা সম্ভব হবে না।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, যত দ্রুত সম্ভব একটি সমীক্ষা করা হবে। এতে জাপান, বিশ্বব্যাংক, জাইকা, চীনসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সরকার পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ করার কথা ভাবছে। তবে সেখানে টানেল নির্মাণ করা হলে প্রকল্পটি বেশি সাশ্রয়ী হবে বলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন। তবে সমীক্ষা না করে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তই নেবে না সরকার। এর আগে চলতি বছরের ২৪ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা-পরবর্তী ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মতে টানেল ব্যয়সাশ্রয়ী। ফলে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু না করে টানেল নির্মাণ করা ভালো হবে। শুধু তা-ই নয়, দ্বিতীয় যমুনা সেতু নির্মাণের বদলে সেখানেও টানেল নির্মাণ করা হলে ভালো হবে। সেতুর বদলে টানেল নির্মাণ করলে ব্যয় কম হবে ও সময় কম লাগবে। সেতুর বদলে এসব স্থানে টানেল নির্মাণ করা যায় কি না চিন্তা করা দরকার বলে তিনি মনে করেন। অবশ্য এসব নিয়ে সেতু বিভাগও নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের ক্ষেত্রে যে অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যে অর্জিত হয়েছে, তাতে টানেল নির্মাণ করাটাই ব্যয় ও সময়সাশ্রয়ী বলে মনে করে সেতু বিভাগ কর্তৃপক্ষ। এদিকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতা ২০২১-২২-এ বলেছেন, কর্ণফুলী টানেলের মতো যমুনা নদীর তলদেশেও টানেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রথম পদ্মা সেতুর মতো দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বা টানেল যা-ই নির্মাণ করা হোক, সেটি নিজস্ব অর্থায়নেই বাস্তবায়নের বিকল্প পরিকল্পনা করছে সরকার। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরই এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের চূড়ান্ত জরিপ করা হবে। একই সঙ্গে প্রথম পদ্মা সেতুর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর ডিজাইন করা হবে। যদিও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছিল প্রায় ১২ বছর আগে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু কিংবা টানেল নির্মাণ প্রকল্পের চূড়ান্ত জরিপ প্রক্রিয়া শেষ করতে চায় সরকার।

পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) নিয়ে কাজ করছে সেতু বিভাগ। মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, এ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে সম্মতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে সরকার একক বা যৌথ অর্থায়নকারী হিসেবে কোন সংস্থাকে বেছে নেবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির সঙ্গে সরকারের একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, প্রথম পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক তাদের অর্থায়ন প্রত্যাহার করে নেয়। এতে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হলে সেতুর বাস্তবায়ন কাজ পিছিয়ে যায়। একই সঙ্গে সরকার আন্তর্জাতিক মহলে নানা প্রশ্নের মুখে পড়ে। যদিও পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাংকের সেই অপবাদ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ওই তিক্ত অভিজ্ঞতাকে আমলে নিয়ে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বা টানেল নিয়ে সরকার কিছুটা ধীরেই চলছে। নতুন করে আর কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে চায় না সরকার। এমনকি কোনো অর্থায়নকারী স্বেচ্ছায় এগিয়ে না এলে নিজস্ব অর্থায়নেই দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বা টানেলও বাস্তবায়নের এক রকম পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। প্রয়োজনে রিজার্ভের অর্থও এখানে কাজে লাগানো হতে পারে। আবার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতেও এগোতে পারে সরকার। এর আগে পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণে জাইকা তাদের বিস্তারিত সমীক্ষায় চারটি স্থানকে সুবিধাজনক হিসেবে চিহ্নিত করে। এগুলো হলো পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ, দোহার-চরভদ্রাসন, মাওয়া-জাজিরা ও চাঁদপুর-ভেদরগঞ্জ। এর মধ্যে মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে দেশের বৃহত্তম পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প আগামী জুনে শেষ হতে যাচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ পয়েন্টে হবে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বা টানেল। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রাজবাড়ীর সড়ক যোগাযোগের দূরত্ব কমে আসবে।

গোপালগঞ্জ, যশোর ও মাদারীপুর জেলার অংশবিশেষের দূরত্বও কমবে। জানা গেছে, প্রস্তাবিত এ সেতু বা টানেলে দৈর্ঘ্য হবে ৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ১২১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। প্রকল্পের প্রস্তাব ইতিমধ্যে অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম দিকে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। সে সময় অবশ্য দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছিল ৫ কিলোমিটার। পরে এর দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় নির্মাণ ব্যয় ৩ হাজার কোটি টাকা দাঁড়ায়। তবে এ ব্যয় আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা।
সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

সেতু হবে নাকি টানলে হবে ? যা জানালো পরিকল্পনা মন্ত্রাণালয়

Update Time : ০৩:৪৩:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী পদ্মা নদীতে আরেকটি সেতু নির্মাণ করা হবে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ নৌরুটে। তবে এটি সেতু হবে নাকি টানেল, তা নিয়ে এখানো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, এ ধরনের স্থানে সেতু নির্মাণে ব্যয় হয় অনেক বেশি। আবার সময়ও প্রয়োজন হয় অতিরিক্ত। এতে করে প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা জটিলতাও দেখা দেয়, যা ব্যয় বৃদ্ধি করে। আর নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ করা হলে একদিকে ব্যয়সাশ্রয়ী হয়, অন্যদিকে সময়ও কম লাগে। এর আগে টানেল নির্মাণের ক্ষেত্রে দেশের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে, যা আগামী বছরের মধ্যেই শেষ হবে। এতে সরকার ও দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর বেশ ভালোই অভিজ্ঞতা হয়েছে। আবার পদ্মা সেতুর বড় স্থাপনা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করতে পেরেও অনন্য অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতার স্বাক্ষর রেখেছে সরকার। এ জন্য পদ্মা নদীর অপর দুই প্রান্তে (পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ) মানিকগঞ্জ আর রাজবাড়ীকে যুক্ত করতে টানেল, নাকি সেতু নির্মাণ করা হবে এটি নিয়ে একটি উচ্চতর সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। তবে চলতি বছরের মধ্যে সমীক্ষা হয়তো করা সম্ভব হবে না।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, যত দ্রুত সম্ভব একটি সমীক্ষা করা হবে। এতে জাপান, বিশ্বব্যাংক, জাইকা, চীনসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সরকার পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ করার কথা ভাবছে। তবে সেখানে টানেল নির্মাণ করা হলে প্রকল্পটি বেশি সাশ্রয়ী হবে বলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন। তবে সমীক্ষা না করে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তই নেবে না সরকার। এর আগে চলতি বছরের ২৪ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা-পরবর্তী ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মতে টানেল ব্যয়সাশ্রয়ী। ফলে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু না করে টানেল নির্মাণ করা ভালো হবে। শুধু তা-ই নয়, দ্বিতীয় যমুনা সেতু নির্মাণের বদলে সেখানেও টানেল নির্মাণ করা হলে ভালো হবে। সেতুর বদলে টানেল নির্মাণ করলে ব্যয় কম হবে ও সময় কম লাগবে। সেতুর বদলে এসব স্থানে টানেল নির্মাণ করা যায় কি না চিন্তা করা দরকার বলে তিনি মনে করেন। অবশ্য এসব নিয়ে সেতু বিভাগও নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের ক্ষেত্রে যে অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যে অর্জিত হয়েছে, তাতে টানেল নির্মাণ করাটাই ব্যয় ও সময়সাশ্রয়ী বলে মনে করে সেতু বিভাগ কর্তৃপক্ষ। এদিকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতা ২০২১-২২-এ বলেছেন, কর্ণফুলী টানেলের মতো যমুনা নদীর তলদেশেও টানেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রথম পদ্মা সেতুর মতো দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বা টানেল যা-ই নির্মাণ করা হোক, সেটি নিজস্ব অর্থায়নেই বাস্তবায়নের বিকল্প পরিকল্পনা করছে সরকার। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরই এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের চূড়ান্ত জরিপ করা হবে। একই সঙ্গে প্রথম পদ্মা সেতুর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর ডিজাইন করা হবে। যদিও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছিল প্রায় ১২ বছর আগে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু কিংবা টানেল নির্মাণ প্রকল্পের চূড়ান্ত জরিপ প্রক্রিয়া শেষ করতে চায় সরকার।

পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) নিয়ে কাজ করছে সেতু বিভাগ। মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, এ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে সম্মতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে সরকার একক বা যৌথ অর্থায়নকারী হিসেবে কোন সংস্থাকে বেছে নেবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির সঙ্গে সরকারের একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, প্রথম পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক তাদের অর্থায়ন প্রত্যাহার করে নেয়। এতে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হলে সেতুর বাস্তবায়ন কাজ পিছিয়ে যায়। একই সঙ্গে সরকার আন্তর্জাতিক মহলে নানা প্রশ্নের মুখে পড়ে। যদিও পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাংকের সেই অপবাদ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ওই তিক্ত অভিজ্ঞতাকে আমলে নিয়ে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বা টানেল নিয়ে সরকার কিছুটা ধীরেই চলছে। নতুন করে আর কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে চায় না সরকার। এমনকি কোনো অর্থায়নকারী স্বেচ্ছায় এগিয়ে না এলে নিজস্ব অর্থায়নেই দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বা টানেলও বাস্তবায়নের এক রকম পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। প্রয়োজনে রিজার্ভের অর্থও এখানে কাজে লাগানো হতে পারে। আবার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতেও এগোতে পারে সরকার। এর আগে পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণে জাইকা তাদের বিস্তারিত সমীক্ষায় চারটি স্থানকে সুবিধাজনক হিসেবে চিহ্নিত করে। এগুলো হলো পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ, দোহার-চরভদ্রাসন, মাওয়া-জাজিরা ও চাঁদপুর-ভেদরগঞ্জ। এর মধ্যে মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে দেশের বৃহত্তম পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প আগামী জুনে শেষ হতে যাচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ পয়েন্টে হবে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বা টানেল। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রাজবাড়ীর সড়ক যোগাযোগের দূরত্ব কমে আসবে।

গোপালগঞ্জ, যশোর ও মাদারীপুর জেলার অংশবিশেষের দূরত্বও কমবে। জানা গেছে, প্রস্তাবিত এ সেতু বা টানেলে দৈর্ঘ্য হবে ৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ১২১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। প্রকল্পের প্রস্তাব ইতিমধ্যে অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম দিকে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। সে সময় অবশ্য দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছিল ৫ কিলোমিটার। পরে এর দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় নির্মাণ ব্যয় ৩ হাজার কোটি টাকা দাঁড়ায়। তবে এ ব্যয় আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা।
সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন