০৬:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিন কি রাত উভয় সময়ে দৌলতদিয়া ঘাটে যাত্রী ও পন্যবাহি ট্রাকের দীর্ঘ সারি লেগেই আছে।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:২৯:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১
  • ২৪৭ Time View

বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত ফেরি ঘাটের মধ্যে একটি রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাট ও মানিকগঞ্জের জেলার পাটুরিয়া ঘাট। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত এই ঘাট ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন পারাপার হচ্ছে, পারাপার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু গত এক মাসের বেশি সময় ধরে এই নৌরুটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি যেন এক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রীবাহী বাস ও পন্যবোঝাই ট্রাক গুলোকে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

এক্ষেত্রে যাত্রীবাহী বাস ও কাচামালের ট্রাক আগে ফেরি পেলেও সেখানেও সময় লাগছে ৫/৬ ঘন্টা, অন্যান্য পন্যবাহী এক এক টি ট্রাক ফেরিতে উঠতে সময় লাগছে ৩/৫ দিন পর্যন্ত। আর এতে ভোগান্তিতে পরছে অপেক্ষমাণ ট্রাক গুলোর চালক ও সহযোগী কে। কোন না কোন কারনে ঘাট সল্পতা , নাব্যতা সংকট, ফেরি সল্পতা লেগেই আছে এই দৌলতদিয়া -পাটুরিয়া নৌরুটে।

অন্যদিকে দৌলতদিয়া ঘাটে রাতের চিত্র বলতে গেলে একি রকম, দিনের বেলায় ৩/৪ কিলোমিটার যানবাহনের দীর্ঘ সারি থাকলেও প্রায় রাতে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে শুরু করে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ৫/৬ কিলোমিটার গোয়ালন্দ অংশে, জামতলা অংশে পর্যন্ত ট্রাক ও বাসের দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়।

দৌলতদিয়া ঘাট ও গোয়ালন্দ ঘুরে দেখা গেছে, যানবাহনের এই সকল দীর্ঘ সারি জন্য স্থানীয় এলাকাবাসীর অনেক সমস্যা হচ্ছে, দৌলতদিয়া থেকে গোয়ালন্দ দূরত্ব ৫ কিলোমিটার পথ কিন্তু এই যানযটের কারনে এই ৫ কিলোমিটার পথ পারি দিতে এক থেকে দেড় ঘন্টা সময় লাগছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন অপেক্ষমাণ যানবাহন গুলো এলোমেলো ভাবে নিজ ইচ্ছামত রাস্তা দাড়িয়ে থাকে, দুই লেনের সড়কে তারা পুরো লেন জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকার কারনে ছোট গাড়ি, অটো, মোটরযান নিয়ে বিপাকে পরতে হচ্ছে।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায় দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট হতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের নুরু মন্ডল পাড়া পর্যন্ত ট্রাকের দীর্ঘ সারি, আর যাত্রীবাহী বাসের সারি জিরো পয়েন্ট হতে দৌলতদিয়া কাফিল ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত। তবে যানবাহনের এই দীর্ঘ সারি বেলা বাড়ার সাথে সাথে আরো বাড়বে।

কথা হয় দৌলতদিয়ায় অপেক্ষায় থাকা গাজীপুর গামী ট্রাক চালক ইসলাম শেখের সাথে তিনি বলেন,খুলনা থেকে গত ১০ নভেম্বর ইজিবাইকের একটি চালান গাজীপুরে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হয়ে ওই দিন সন্ধায় গোয়ালন্দ মোড়ে ট্রাকের সিরিয়াল পরি, অনেক কষ্ট করে আজ সকাল ১১টায় ঘাটের জন্য রওনা দেই কিন্তু যেভাবে গাড়ি গুলোকে ছাড়া হচ্ছে তাতে আজ ফেরি পাবনা বলে মনে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন গোয়ালন্দ মোড়ে ও দৌলতদিয়া ঘাটে মানসম্পন্ন খাবার হোটেল, টয়লেট ও গোসল খানা নেই, যার জন্য আমাদের আরো ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে।

কথা হয় ট্রাকচালক শরিফ মোল্লার সাথে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত অতি দ্রুততার সাথে দৌলতদিয়া ঘাট বাড়ানো সাথে ফেরির সংখ্যা ও। প্রত্যেক ফেরিতে বাসের সাথে ট্রাক গুলোকে পার হবার সুযোগ দিলে এই যানযট অনেকটা কমে যেত, কিন্তু তা হচ্ছে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কার্যালয় (বিআইডাব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন বলেন ফেরি পর্যাপ্ত থাকলেও একটা ফেরি ডুবে যাওয়ার কারনে পাটুরিয়া এলাকায় একটি ঘাট বন্ধ আছে। সাথে ফেরি ডোবার প্রভাব রয়েছে। অন্যদিকে নাব্যতা সংকট নিরসনের জন্য ড্রেজিং করা হচ্ছে নৌরুট। আমরা আশাবাদী এ সপ্তাহে কিছুটা ভোগান্তি কমে যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

ফিনল্যান্ড 5 বছরের কাজের ভিসা | ফিনল্যান্ডে দক্ষ এবং অদক্ষ চাকরি নিয়োগ এপ্রিল-মে 2024 এখনি এপ্লাই করুন.

দিন কি রাত উভয় সময়ে দৌলতদিয়া ঘাটে যাত্রী ও পন্যবাহি ট্রাকের দীর্ঘ সারি লেগেই আছে।

Update Time : ০৫:২৯:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১

বাংলাদেশের অন্যতম ব্যস্ত ফেরি ঘাটের মধ্যে একটি রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাট ও মানিকগঞ্জের জেলার পাটুরিয়া ঘাট। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত এই ঘাট ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন পারাপার হচ্ছে, পারাপার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু গত এক মাসের বেশি সময় ধরে এই নৌরুটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি যেন এক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রীবাহী বাস ও পন্যবোঝাই ট্রাক গুলোকে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

এক্ষেত্রে যাত্রীবাহী বাস ও কাচামালের ট্রাক আগে ফেরি পেলেও সেখানেও সময় লাগছে ৫/৬ ঘন্টা, অন্যান্য পন্যবাহী এক এক টি ট্রাক ফেরিতে উঠতে সময় লাগছে ৩/৫ দিন পর্যন্ত। আর এতে ভোগান্তিতে পরছে অপেক্ষমাণ ট্রাক গুলোর চালক ও সহযোগী কে। কোন না কোন কারনে ঘাট সল্পতা , নাব্যতা সংকট, ফেরি সল্পতা লেগেই আছে এই দৌলতদিয়া -পাটুরিয়া নৌরুটে।

অন্যদিকে দৌলতদিয়া ঘাটে রাতের চিত্র বলতে গেলে একি রকম, দিনের বেলায় ৩/৪ কিলোমিটার যানবাহনের দীর্ঘ সারি থাকলেও প্রায় রাতে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে শুরু করে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ৫/৬ কিলোমিটার গোয়ালন্দ অংশে, জামতলা অংশে পর্যন্ত ট্রাক ও বাসের দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়।

দৌলতদিয়া ঘাট ও গোয়ালন্দ ঘুরে দেখা গেছে, যানবাহনের এই সকল দীর্ঘ সারি জন্য স্থানীয় এলাকাবাসীর অনেক সমস্যা হচ্ছে, দৌলতদিয়া থেকে গোয়ালন্দ দূরত্ব ৫ কিলোমিটার পথ কিন্তু এই যানযটের কারনে এই ৫ কিলোমিটার পথ পারি দিতে এক থেকে দেড় ঘন্টা সময় লাগছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন অপেক্ষমাণ যানবাহন গুলো এলোমেলো ভাবে নিজ ইচ্ছামত রাস্তা দাড়িয়ে থাকে, দুই লেনের সড়কে তারা পুরো লেন জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকার কারনে ছোট গাড়ি, অটো, মোটরযান নিয়ে বিপাকে পরতে হচ্ছে।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায় দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট হতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের নুরু মন্ডল পাড়া পর্যন্ত ট্রাকের দীর্ঘ সারি, আর যাত্রীবাহী বাসের সারি জিরো পয়েন্ট হতে দৌলতদিয়া কাফিল ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত। তবে যানবাহনের এই দীর্ঘ সারি বেলা বাড়ার সাথে সাথে আরো বাড়বে।

কথা হয় দৌলতদিয়ায় অপেক্ষায় থাকা গাজীপুর গামী ট্রাক চালক ইসলাম শেখের সাথে তিনি বলেন,খুলনা থেকে গত ১০ নভেম্বর ইজিবাইকের একটি চালান গাজীপুরে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হয়ে ওই দিন সন্ধায় গোয়ালন্দ মোড়ে ট্রাকের সিরিয়াল পরি, অনেক কষ্ট করে আজ সকাল ১১টায় ঘাটের জন্য রওনা দেই কিন্তু যেভাবে গাড়ি গুলোকে ছাড়া হচ্ছে তাতে আজ ফেরি পাবনা বলে মনে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন গোয়ালন্দ মোড়ে ও দৌলতদিয়া ঘাটে মানসম্পন্ন খাবার হোটেল, টয়লেট ও গোসল খানা নেই, যার জন্য আমাদের আরো ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে।

কথা হয় ট্রাকচালক শরিফ মোল্লার সাথে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত অতি দ্রুততার সাথে দৌলতদিয়া ঘাট বাড়ানো সাথে ফেরির সংখ্যা ও। প্রত্যেক ফেরিতে বাসের সাথে ট্রাক গুলোকে পার হবার সুযোগ দিলে এই যানযট অনেকটা কমে যেত, কিন্তু তা হচ্ছে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কার্যালয় (বিআইডাব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন বলেন ফেরি পর্যাপ্ত থাকলেও একটা ফেরি ডুবে যাওয়ার কারনে পাটুরিয়া এলাকায় একটি ঘাট বন্ধ আছে। সাথে ফেরি ডোবার প্রভাব রয়েছে। অন্যদিকে নাব্যতা সংকট নিরসনের জন্য ড্রেজিং করা হচ্ছে নৌরুট। আমরা আশাবাদী এ সপ্তাহে কিছুটা ভোগান্তি কমে যাবে।